ইনকিলাব ডেস্ক : পাকিস্তানের কোয়েটায় হাসপাতালে বোমা হামলার মধ্য দিয়ে বেলুচিস্তান প্রদেশের এ শহরটি গোটা এক প্রজন্মের আইনজীবীদের হারিয়েছে। হামলায় নিহত ৭০ জনের মধ্যে ৬০ জনই আইনজীবী ছিলেন। গত সোমবার বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় সিভিল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একটি কক্ষে বোমা হামলা হয়। বেলুচিস্তান বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিলাল আনওয়ার কাসি অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হওয়ার পর জরুরি বিভাগের ওই কক্ষটিতে তার মৃতদেহ রাখা ছিল। সতীর্থের প্রতি সম্মান জানাতে অনেক আইনজীবী কক্ষটিতে ভিড় করেছিলেন।
আর ওই ভিড়ের মধ্যেই আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়। এক সময়কার পাকিস্তানি তালিবান-এর অংশ জামাত-উল-আহরার হামলার দায় স্বীকার করে। ইসলামিক স্টেটও (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার পাকিস্তানি বার অ্যাসোসিয়েশন অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। যদিও বেলুচিস্তানে আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য খুব কম আইনজীবীই জীবিত আছেন। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, খুব কম আইনজীবীই হামলা থেকে বেঁচেছেন। তাদের একজন বারখুরদার খান। তিনি বেলুচিস্তান বার কাউন্সিলের সদস্য। গত নয় মাস ধরে তিনি আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। নিজ দৃষ্টিকোণ থেকে ভয়াবহ এ ঘটনার পরবর্তী অবস্থার বর্ণনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বলেন, সোমবার যে কয়জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও ব্যারিস্টার মারা গেছেন তাদের সবাইকে আমি সম্মান জানাই।
এ ঘটনার পর অনেক জুনিয়র আইনজীবী যারা তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তারা বেকার হয়ে পড়ল এবং তাদের জীবন অনেক কঠিন হয়ে গেল। যে কয়জন মারা গেছেন তাদের অধিকাংশই প্রথমসারির আইনজীবী ছিলেন। জাতীর এই দুর্দশা ও ক্ষতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। তাদের বাবার কাঁধ ন্যুব্জ হয়ে গেছে, তাদের ভাইদের মেরুদ- ভেঙে গেছে। তাদের সন্তানরা এখনো বুঝতে পারছে না যে, তারা কি হারিয়েছে। যে কয়জন আইনজীবী আদালত থেকে আমাকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন তাদের একজন ছাড়া বাকি সবাই মারা গেছেন। একমাত্র জীবিত নাভিদ কাম্বানির অবস্থাও গুরুতর। চিকিৎসার জন্য তাকে হেলিকপ্টারে করাচি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পিটিআই, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন