সরকার জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ফোবিয়ায় ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, শহীদ জিয়া সম্পর্কে নাটক প্রচারিত হচ্ছে একজন আওয়ামী লীগের এমপির টিভিতে। কিন্তু বলবো- আপনাদের বড় বড় উস্তাদরা অপপ্রচার করে কি কোনো লাভ হয়েছে? আপনারা ভয় পান বলেই এসব করছেন। আসলে তারা জিয়া, খালেদা ও তারেকের ফোবিয়ায় ভুগছেন। এজন্য চিকিৎসা দরকার।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খানকে অব্যাহতির প্রতিবাদ ও পুনর্বহালের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোর্শেদ হাসান খান চারটা ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছেন। মেট্রিক ও ইন্টারে বোর্ড স্ট্যান্ড করেছেন। তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে! এভাবে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে হয়রানি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেননা। তিনি বলেন, বর্তমান ভিসি তো আজ্ঞাবহ। তাদের কাছে সুবিচার পাওয়ার কোনো কারণ নেই। নজরুল ইসলাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আইন ভঙ্গ করে যাদের চাকরি খেয়েছে তাদেরকে পুনর্বহাল করতে হবে। এখন না হলেও একদিন তাদের পুনর্বহাল হবেই ইনশাআল্লাহ।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে নানামুখী সংকট চলছে। আমরা করোনার কারণে একটা মাস্ক পরি। কিন্তু সরকারের আরো মাস্ক পরা দরকার। তারা নানা ভাইরাসে আক্রান্ত। এধরনের ভাইরাস থেকে বাঁচতে সবার উচিত দুর্নীতি বিরোধী মাস্ক পরা। দেশে নারী নির্যাতন মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা এখন তিন নাম্বার ভাইরাস। এজন্যও তাদের মাস্ক পরা উচিত। তবে তারা বাঁচতে পারবেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, রাজনীতিবিদদের নিরুৎসাহিত করা গণতন্ত্র ও দেশের সুষ্ঠু রাজনীতির জন্য খারাপ। বিএনপি তো একদলীয় শাসনের কবরের ওপর বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। সুতরাং গণতন্ত্রের জন্য তাদের আবেগ কম। কিন্তু জনগণের কাছে গণতন্ত্রের আবেগ বেশি। কারণ সেটা রক্ত দিয়ে অর্জিত। আগামীতে জনগণ একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শরিক হবেন এই প্রত্যাশা করছি।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা এই সরকার তথা আওয়ামী লীগের সেবা আর চাইনা। আপনি জনগণের মতামত নিন গদি থেকে নেমে যান। জনগণ তাদের পথ বেছে নিবে। তিনি বলেন, এই সরকারের হাতে কেউ নিরাপদ নন। আজকে দেশের কোথাও মা বোনেরা নিরাপদ নন। ছাত্রলীগের ছেলেরা মেয়েদের ধর্ষণ করে বলে ওটা আমাদের না। এই সরকার ইতিহাস নিজেরাই বিকৃতি করছে। ড. মোর্শেদ প্রবন্ধ লিখেছেন। সেটা পছন্দ নাই হতে পারে। আপনারাও লিখেন। তাই বলে চাকরি খাবেন এই অধিকার কে দিয়েছে?
সমাবেশ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ওয়াহিদুজ্জামান এপোলোকে চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়। সেইসাথে সিলেটের এমসি কলেজে ছাত্রলীগের হাতে তরুণী ধর্ষণের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন পেশাজীবীরা।
বিএসপিপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ডা. জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধন ও পেশাজীবী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাবির সাবেক প্রো-ভিসি ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, বিএনপির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম, সহ সিনিয়র পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধন ও সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, নূরুল আমিন, ইসরাফিল প্রামণিক, দাউদ খান, সাবেক ছাত্রনেতা শহীদুল্লাহ ইমরান, ইখতিয়ার রহমান কবির, স্বেচ্ছাসেবক দলের কাজী ইফতেখায়রুজ্জামান শিমুল, শামসুল আলম রানা, আবুল হাসান, বিএনপি নেত্রী জাহানারা বেগম, ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান, ইডেন কলেজ ছাত্রদলের সানজিদা ইয়াসমিন তুলি উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন