কারো বাড়িতে সুন্দরী মেয়ে দেখলেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘মনোভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে’ ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা অপকর্মে লিপ্ত ও উৎসাহিত হচ্ছেন। সামগ্রিক ঘটনাগুলো, সামগ্রিক পরিবেশগুলো বলে দিচ্ছে, আর বেশিদিন নয় অনেক হয়েছে। এই জালিম সরকার এত অত্যাচার এত নির্যাতন করেছে, তাদের সময় ফুরিয়ে আসছে।
বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচনের সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের হাতে ধারালো অস্ত্র-পিস্তল থাকে। ভোটের দিন এরা জনগণকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেবে না, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত করবে, তবুও তাদের বিচার হবে না। আর এগুলোতেই অনুপ্রাণিত হয়ে এরা এমসি কলেজের ঘটনার মতো বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই এমসি কলেজের মতো ঘটনা ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র, যুব সংগঠনের নেতাকর্মীরা করে যাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এদেরকে দিয়েই তো ভোট কেন্দ্রে ভোট চুরি করা হয়েছে, ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্য বলে- ‘আমরা যা করছি সরকারের জন্য করছি। মেজর সিনহার মতো ব্যক্তিকে ক্রসফায়ারে দিয়ে দেয়া হয়েছে। কিসের মেজর সিনহা, এগুলো করলে আমাদের কিছুই হবে না।
রিজভী বলেন, এই সরকারের হাত রক্তে রঞ্জিত। দেশের মাটি কোনদিনও এসব অপকর্ম গ্রহণ করবে না। এবার তাদের অত্যাচার নির্যাতন চারিদিক থেকে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। সরকারও কিন্তু এটি বুঝতে পারছে না, সরকার মনে করছে ‘আমাদের তো পুলিশ আছে, র্যাব আছে’। কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে জনগণের শক্তি গজিয়ে উঠছে এটা সরকার টের পাচ্ছেন না। যখন তাদের সিংহাসন হুড়মুড় করে উল্টে পড়ে যাবে সেদিন বুঝবে- ‘হায় একি করেছি আমরা’।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, এটি একটি অলীক কল্পনা। নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, এখন থেকে আর রাতে নির্বাচন হবে না। যার দায়িত্ব নির্বাচন সুষ্ঠু করা তিনি যখন এ কথা বলেন, তখন কথার মধ্য দিয়েই তিনি প্রমাণ করেন- আগের সমস্ত রাতের ভোটের নির্বাচনের জন্য তিনি দায়ী। এসময় সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সংস্কৃতিক সংস্থা- জাসাস আয়োজিত এক মানববন্ধনে রিজভী বলেন, আপনারা ভীত সন্ত্রস্ত্র থেকে চুপ চুপ করে বস্তপচা চটি নাটক লিখে টেলিভিশনকে ভয় দেখান। পত্রিকাগুলোকে ভয় দেখিয়ে ছাপানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বিশ্বের ইতিহাসে যারা মহান নেতা তাদের নাম ইতিহাসের বীর হয়েই থাকেন। আমরা জানি আমাদের ওপর অত্যাচার হবে। কিন্তু এই অত্যচারের প্রতিশোধ ঐতিহাসকিভাবেই একদিন জনগণ তাদেরকে দিবে। তাদেরকে দিতেই হবে। তিনি বলেন, টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া পর্যন্ত শহীদ জিয়ার নাম উচ্চারিত হচ্ছে এবং হতেই থাকবে ইনশাআল্লাহ। যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়ে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি উদ্ভাসিত থাকবেন মানুষের হৃদয়ে হৃদেয়ে। বরং যারা বস্তাপচা নাটক নির্মাণ করেছে কয়েকটি টাকার বিনিময়ে তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
রিজভী বলেন, সরকার টিকে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পেটোয়া বাহিনী দিয়ে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে আছে জনগণ। এজন্য দেশজুড়ে জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম দৃঢ়কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে। ‘আমার নেতা জিয়া, তার নামেই তো আন্দোলিত টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া।
জাসাসের সভাপতি ড. মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা প্রমুখ। এসময় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোর্শেদ আলম উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন