শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতা উপেক্ষা করে যাচ্ছে বিশ^

প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশ্ব মিডিয়ায় কাশ্মীরিদের দুর্ভোগের কথা আসছে না, প্রশ্নবিদ্ধ গণমাধ্যমের ভূমিকা
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে চলছে ভয়াবহ নৃশংসতা, মানবাধিকার লংঘন ও হত্যাকা-। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সরাসরি এসব হত্যাকা-ের সাথে জড়িত। কিন্তু বহির্বিশ^ অন্যান্য দেশের সন্ত্রাস-সহিংসতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও জম্মু-কাশ্মীরের এই মানবতা-বিরোধী অপরাধ নিয়ে আদৌ মাথা ঘামাচ্ছে না। ফলে কাশ্মীরি জনগণের দুঃখ-দুর্দশা বেড়েই চলেছে। পাখির মতো সেখানে মানুষ হত্যা করছে ভারতীয় বাহিনী। গণমাধ্যমের দৃষ্টি থেকে কৌশলে আড়াল করে রাখা হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও পুলিশের বর্বরোচিত হত্যাকা-ের ঘটনাগুলো। মধ্যপ্রাচ্যে আত্মঘাতী বোমা হামলায় মাত্র দু’জন মানুষ নিহত হলেও সে খবর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়। কিন্তু মাত্র সপ্তাহের ব্যবধানে জম্মু-কাশ্মীরে অর্ধশতাধিক মুসলমানকে হত্যা এবং শত শত মুসলমানকে মারাত্মকভাবে আহত করার খবর প্রকাশ করতে তারা যেন কুণ্ঠিত। কাশ্মীরে পরিকল্পিতভাবে যুবকদের চেখে গুলি করে তাদের চিরতরে অন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এর চেয়ে অমানবিক ঘটনা আর কি হতে পারে?
শুধু ভারত নয়, বরং এশিয়া মহাদেশের মধ্যে মাত্র কয়েকটি নয়নাভিরাম জনপদের তালিকা করলে তার মধ্যে জম্মু-কাশ্মীর অবশ্যই অন্যতম হিসেবে বিবেচিত হবে। অথচ ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরবাসীর স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ ছয় দশকের বেশি সময় ধরে যে প্রাণহানি ও রক্তের ধারা প্রবাহিত হয়েছে তাতেও কাশ্মীরবাসীর আন্দোলন-সংগ্রাম দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। বরং এসব ঘটনা ঘৃণা-লজ্জা ও বেইমানীর তিলক এঁকে দিয়েছে দিল্লীর কর্তাদের কপালে। সর্বশেষ ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুলিতে ৮ জুলাই হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বোরহান ওয়ালি নিহত হওয়ার পর সমগ্র পশ্চিম ও উত্তর কাশ্মীরজুড়ে পুলিশ-জনতার মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। এ অঞ্চলের প্রধান মসজিদগুলো বন্ধ এবং ১০ জেলায় কারফিউ জারি করেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায়নি। বরং দিন দিন পরিস্থিত জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। পরিস্থিতির বেহাল দশা উপলব্ধি করে আফ্রিকা সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরলেও জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি উন্নতির বদলে দিনকে দিন অবনতি ঘটছে। জম্মু-কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনতা আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রত্যয়ী। শিক্ষিত তরুণরা আন্দোলনমুখী হচ্ছে ব্যাপকভাবে। তাদের একটাই দাবি, কাশ্মীরের আজাদী। বর্তমান উত্তপ্ত অবস্থার পূর্বে সর্বশেষ ২০১০ সালেও দীর্ঘ ৪ মাসের আন্দোলনে এ অঞ্চলে ১১০ জন তরুণ নিহত হয়েছিল। বর্তমান সময়ে যারা নিহত হয়েছে তাদের সিংহভাগ তরুণ এবং ১৯৮৯ সালের পর থেকে স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনকারীরা ব্যাপক জনসমর্থন পাচ্ছে। ভারত সরকার গড়ে প্রতি ৭ জন কাশ্মীরীকে দমিয়ে রাখার জন্য একজন পাহারাদার নিযুক্ত করেছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীরে নিয়োজিত ভারতের সেনাবাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত পুলিশবাহিনী গুপ্ত হত্যা, প্রকাশ্য হত্যা, দমন-পীড়ন, ধর্ষণ করেও কাশ্মীরিদের তাদের ন্যায্য দাবী থেকে বিরত কিংবা দমিয়ে রাখতে পারেনি। অন্যদিকে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘ বিরোধ রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে এ নিয়ে একাধিকবার যুদ্ধ পর্যন্ত হয়েছে। কাশ্মীরের মালিকানা দাবিতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৪৭, ১৯৬৫ এবং ১৯৯৯ সালে অন্তত তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। এছাড়া ১৯৮৪ সালের পর থেকে সিয়াচেন হিমবাহ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ কয়েকটি খ-যুদ্ধ হয়েছে। স্বাধীনতার দাবিতে জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট, হরকত উল-জিহাদ-আল ইসলামী, লস্কর-ই-তৈয়্যবা, জইস-ই-মহম্মদ, হিজবুল মুজাহিদিন এবং আল বদর বাহিনী প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ক্রসফায়ারের নামে হিজবুল মুজাহিদিন কামান্ডারকে হত্যার পর আবার ফুঁসে উঠেছে পুরো জম্মু-কাশ্মীর। জম্মু-কাশ্মীরবাসীর দাবী, ক্রসফায়ারে নয় বরং তাদের কমান্ডারকে ঠা-া মাথায় খুন করা হয়েছে যা পরিকল্পিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। ওয়েবসাইট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন