ইনকিলাব ডেস্ক : প্রথমবারের মত ইরানের ভূখ- ব্যবহার করে সিরিয়ায় জঙ্গিদের আস্তানায় বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি ঘাঁটি থেকে এ হামলা চালানো হয় বলে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। এদিকে, সিরিয়ায় বিমান হামলা চালানোর লক্ষ্যে রাশিয়া ইরানের একটি বিমান ঘাঁটি ব্যবহার করতে শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, রাশিয়া যেটা করেছে সেটা দুর্ভাগ্যজনক তবে অপ্রত্যাশিত নয়। রাশিয়া যে ইরানের বিমান ঘাঁটি থেকে সিরিয়ায় হামলা চালাতে শুরু করেছে তা জানা যায় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি থেকেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম ইরানে সৈন্য মোতায়েন করল রাশিয়া। সেখান থেকে সিরিয়ায় কথিত আইএস ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলাও চালিয়েছে তারা। দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, আলেপ্পোর ভেতর ও বাইরে এবং সিরিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে গত মঙ্গলবার ব্যাপক বিমান হামলা চালানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে ওই হামলায় বহুসংখ্যক নিহত হয়েছে। সিরিয়া ছাড়া এই প্রথম রাশিয়া অন্য কোনও দেশের ভূখ- ব্যবহার করে সামরিক অভিযান চালাল। এ ঘটনা ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার ইরানের হামেদান বিমানঘাঁটি থেকে রাশিয়ার দূর-পাল্লার তুপলেভ-২২এমথ্রি বোমারু বিমান এবং সুখোই-৩৪ বোমারু বিমান সিরিয়ায় বোমা হামলা চালিয়েছে। সিরিয়ায় পৌঁছানোর জন্য বিমানগুলো (সিরিয়ার) প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশের আকাশসীমা ব্যবহার করেছে কিনা খবরে তা উল্লেখ করা না হলেও ইরাকের আকাশ সীমা অতিক্রম করে থাকতে পারে বলে বলা হয়েছে। রুশ বোমারু বিমানগুলো গত মঙ্গলবার সিরিয়ার আলেপ্পো, ইদলিব এবং দেইর আল জউর প্রদেশের ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও নুসরা ফ্রন্টের উপর হামলা চালিয়েছে বলেও জানিয়েছেন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় অস্ত্রের পাঁচটি বড় গুদাম, একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং তিনটি নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণস্থল ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জঙ্গি নিহত হয়েছে। ১৯৭৯ সালের পর ইরানও এই প্রথম অন্য কোনও দেশকে তাদের ভূখ- ব্যবহার করে সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দিল। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার প্রভাব আরও জোরদার হবে। সেইসঙ্গে রাশিয়ার বিমান বাহিনী আরো কম সময়ে এবং কম খরচে সিরিয়ায় বিমান হামলা চালাতে পারবে। ইরানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রধান রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ কে বলেন, কৌশলগত সহযোগিতার অংশ হিসেবে তেহরান ও মস্কো এখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরষ্পরের সুযোগ-সুবিধা ভাগ করে নিচ্ছে। উভয় দেশই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সমর্থন করছে। তারা সিরিয়ার পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটাতে চাইছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। গত বছর ইরান তাদের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বশক্তির সঙ্গে এক চুক্তিতে উপনীত হয়। বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন