কাশ্মীরে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে আয়োজিত উন্মুক্ত সেমিনারে কেউ কেউ কাশ্মীরের স্বাধীনতা চেয়ে সেøাগান দিতেও পারে, কিন্তু সংগঠনের কেউ তা করেনি : অ্যামনেস্টির কৈফিয়ত
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারতে তাদের কার্যক্রম চালাতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছে। অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে গত সোমবার মামলা করেছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) নামের একটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। মামলা দায়েরের পর এবিভিপির মঙ্গলবার ও বুধবারের বিক্ষোভের মুখে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার দিল্লি, পুনে ও চেন্নাইয়ের অফিস সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে ভারতে এ মানবাধিকার সংগঠনের সব অনুষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বুধবার তাদের মুখপাত্র জানান।
অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, কাশ্মীরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার তাদের এক সেমিনারে ভারত-বিরোধী বক্তব্য ও স্লোগান দেয়া হয়েছে। কাশ্মীরে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে বেঙ্গালুরুতে ওই সেমিনার করে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া। অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদ বিজেপি-ঘনিষ্ঠ ছাত্র-সংগঠন। অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে লোক জড়ো করে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টার অভিযোগও এনেছে তারা।
তবে, অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া তাদের বিরুদ্ধে আনা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের ভাষ্য, উন্মুক্ত ওই অনুষ্ঠানে আসা ব্যক্তিদের কেউ কেউ কাশ্মীরের স্বাধীনতা চেয়ে স্লোগান দিলেও তাতে তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরার জড়িত ছিলেন না। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ার মুখপাত্র হিমানশি মাতা বলেন, ওই অভিযোগে আমাদের জড়ানোর কোন যুক্তি থাকতে পারে না। সেমিনারটি সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। সারাক্ষণই মানুষ এসেছে, চলেও গেছে। কেউ কেউ ওরকম করতেও পারে, কিন্তু আমাদের কোনো কর্মচারী এতে জড়িত ছিল না।
তিনি আরো বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেÑ এমন পরিবারের সদস্যদের কথা শুনতে আমাদের বাধা দিচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। পাশাপাশি সমাজকর্মী, যারা এ ধরনের ঘটনার পর সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী, তাদেরও বাধা দেয়া হচ্ছে। কাশ্মীরে নির্যাতনের শিকার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ওই সেমিনারের আয়োজন করা হয় বলে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার মুখপাত্র জানান।
ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি গত ছয় বছরের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি নাজুক। কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনের তরুণ নেতা বোরহান ওয়ানি গত মাসে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হওয়ার পর থেকে সেখানে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। গত দেড় মাসে সংঘর্ষে সেখানে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে। ওই রাজ্যে এখনো কারফিউ চলছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন