শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

রাজনীতি

সরকার ঘরে ঘরে চাকরির পরিবর্তে বেকার সৃষ্টি করছে: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:৫১ পিএম | আপডেট : ৭:৫২ পিএম, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ঘরে ঘরে চাকুরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর তারা ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার পরিবর্তে ঘরে ঘরে বেকার সৃষ্টি করছে। কিছুদিন আগে ২৫ পাটকল বন্ধ করে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী বেকার করা এবং নতুন করে ৬টি চিনিকল বন্ধ ও ৩টি বন্ধের নোটিশ প্রদান করার প্রতিবাদে সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বিরোধী দল ও মতের মানুষদের নিশ্চিহ্ন করে দীর্ঘকাল ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার চিন্তায় বিভোর। এজন্য জনগণের ভালো-মন্দ দেখার সময় তাদের নেই। কিছুদিন আগেও সরকার ২৫টি পাটকল আকষ্মিকভাবে বন্ধ করে দিয়ে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেকার করে দিয়েছে। নতুন করে আবার দেশের ৬টি চিনিকল বন্ধ এবং ৩টি বন্ধের নোটিশ প্রদান করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, চিনিকল বন্ধে সরকারের এই আকষ্মিক সিদ্ধান্তে লাখ লাখ আখচাষী এবং হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী চরম বিপাকে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে হতাশা এবং অনিশ্চয়তা। বেকার হবে শ্রমিক-কর্মচারীরা। সরকারের এই অমানবিক ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্তে একদিকে আখচাষীসহ চিনি কলে খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে অন্যদিকে বাজারে চিনির সংকটও সৃষ্টি হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চিনিকলগুলোকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সরকার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এজন্য চিনিকলসমূহের পরিচালনা পরিষদে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও নেতাকর্মীদের সংযুক্ত করে তাদের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে লুটপাট ও দুর্নীতি করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এই সকল চিনিকলগুলোতে চিনি, চিটা গুড় এবং যন্ত্রপাতি বিক্রয়ের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে কম মূল্যে তারা নিজেরাই ক্রয় করে নিচ্ছে। চিনিকলগুলোতে ইচ্ছেমতো দলীয় লোকদের মাস্টাররোলে চাকরির নামে কোন কাজ না করিয়ে বেতন-ভাতা দিচ্ছে। যার ফলে ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে চিনির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভারত থেকে নি¤œমানের চিনি আমদানী করে বাজারে উচ্চ মূল্যে বিক্রির সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জনগণ। আখ চাষীরা আখ উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হবে। সরকারের এই ভ্রান্ত সিদ্ধান্ত তৃণমূলের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। আখ চাষের এলাকাগুলোতে বর্তমানে লাখ লাখ একর জমিতে আখ দ-ায়মান। ঠিক যেই মূহুর্তে কৃষকরা আখ কাটবে, সেই মুহুর্তে সরকারের এই হটকারী সিদ্ধান্তে কৃষকরা দিশেহারা। উৎপাদিত আখ নিয়ে কৃষকরা কি করবে, তা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত পার করছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যদিও সরকার বলছে, এই আখগুলো পার্শবর্তী চিনিকলে ক্রয় করা হবে, কিন্তু সেই চিনিকলগুলো অনেক দূরে হওয়ায় পরিবহনে যে খরচ লাগবে তা আখের মূল্য থেকে অনেক বেশি। এই চিনিকলগুলো সুনামের সাথে যুগ যুগ ধরে চিনি উৎপাদন করে আসলেও বর্তমানে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণ- চিনিকলগুলোর সকল স্তরে বর্তমান শাসকগোষ্ঠির একক নিয়ন্ত্রণ, লুটপাট, দূর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা। এসব কারণে অন্যান্য কলকারখানার মতো চিনিকলগুলোরও বেহাল অবস্থা। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব, চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে চিনিকলগুলো খুলে দিয়ে আখমাড়াই শুরু করার জোর দাবী জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন