ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের কাশ্মীরে ৪৮তম দিনের মতো কারফিউ ও বিধি-নিষেধ বলবৎ রয়েছে। কারফিউ রয়েছে অনন্তনাগ, পুলাওয়ামা, এবং শ্রীনগর জেলায়। তবে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কারফিউ আংশিক প্রত্যাহার করা হলেও কয়েকটি স্থানে বিধি-নিষেধ অব্যাহত থাকবে। এসব স্থানে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। গত মাসে কাশ্মীরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর এ কারফিউ জারি করা হয়েছিল।
খবরে বলা হয়, গান্ডারবাল, বান্দিপোরা, কুপওয়ারা, বারামুল্লা, সোপাইন, কুলগাম এবং বাগদাম জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি অব্যাহত থাকবে বলেন নিশ্চিত করেছেন এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা। যদিও গত মঙ্গলবার উত্তেজনা নিরসনের কথা বলে শ্রীনগরের কয়েকটি এলাকা থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এতে উত্তেজনা যে কমেনি, তার নজির পাওয়া গেল খোদ ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর শ্রীনগর সফরের দিনে। ওইদিন (গত বুধবার) আবারো অবরুদ্ধ কাশ্মীরে পুলিশি হত্যাকা- ঘটেছে। এদিন দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামার পিংলিনা গ্রামে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুড়লে এক তরুণ নিহত হন। আহত হন অন্তত ২০ জন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত তরুণের নাম মোহাম্মদ আমির মীর। তিনি রতিœপোরা এলাকার বাসিন্দা। এ নিয়ে কাশ্মীরে দেড় মাস ধরে চলা বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দমন নীতিকে কেন্দ্র করে নিহতের সংখ্যা ৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই কাশ্মীরের অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় সেনা ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর যৌথ অভিযানে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল যোদ্ধা নিহত হওয়ার পর কাশ্মীরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ কাশ্মীরিদের দাবি, বুরহানকে ভুয়া এনকাউন্টারে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। সেই বিক্ষোভ এখনো চলছে। আর বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এভাবেই দেড় মাস ধরে কাশ্মীরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার পুলওয়ামা শহরের পিচু এলাকায় সমাবেশের ডাক দেয় দক্ষিণ কাশ্মীরের বাসিন্দারা। তবে সমাবেশ এলাকায় যাওয়ার সব পথ বন্ধ করে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। সমাবেশের জন্য প্রস্তুত করা মঞ্চটিও গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। তবে তাতে দমে না গিয়ে বিক্ষোভকারীরা পিংলেনাতে জড়ো হয় এবং বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রিচুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে টিয়ারশেল ও ছররা গুলি ব্যবহার করে পুলিশ। সে সময় ওই তরুণ আহত হয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি। স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়, ওই ঘটনায় ২০ জন আহত হয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন