ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোগান বলেছেন, সিরিয়ায় চালানো হত্যাকা-ের জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে। এরদোগান আরো বলেন, সিরিয়ার আসাদ সরকার ও রাশিয়া মিলিতভাবে সিরীয় সীমান্তে ৪ লক্ষ লোককে হত্যা করেছে। দোগান নিউজ এজেন্সি এসব কথা জানায়। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সেনেগাল সফররত এরদোগান গত শুক্রবার সেনেগাল প্রেসিডেন্টের সাথে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে আরো বলেন, রাশিয়া এই অঞ্চলে অনধিকার চর্চা করছে এবং মস্কোর দীর্ঘদিনের মিত্র প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের জন্য একটি বুটিক রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, সিরীয় সরকার ও রাশিয়া যৌথভাবে ৪ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। এর জন্য মস্কো দায়ী থাকবে। তার এই মন্তব্য মস্কোকে আরো ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। গত বছরের নভেম্বরে তুর্কি আকাশসীমা লঙ্ঘন করায় একটি রাশিয়ান বিমান গুলি করে ভূপাতিত করে তুর্কি বাহিনী। এরপর থেকে ন্যাটো সদস্য তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে।
সিরিয়ায় ৫ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে দেশ দু’টি পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। রাশিয়ার বিমান হামলা যখন আসাদ সরকারকে শক্তিশালী করে তুলছে তখন তুরস্ক বলছে আসাদের পতনই সিরিয়া সমস্যার একমাত্র সমাধান।
অপর খবরে বলা হয়, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার সিরীয় পার্শ্ববর্তী তুরস্ক সীমান্তে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে তুরস্কের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ইসলামী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আইএইচএইচ জানায়, সিরীয়া থেকে আগত শরণার্থীরা গত বৃহস্পতিবার বাব আল-সালাম সীমান্তের দিকে যাত্র শুরু করে। সংস্থাটির মুখপাত্র সেরকান নার্গিস জানান, গত শুক্রবার শরনার্থীরা ঔ এলাকার কাছাকাছি বেশকিছু তাঁবু স্থাপন করে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে।
আশ্রয় প্রদানকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি সীমান্ত বরাবর বাস্তুচ্যুত সিরীয়দের জন্য ইতিমধ্যে ১০টি শিবির স্থাপন করেছে বলেও জানান তিনি।
সীমান্ত বন্ধ থাকলেও তুরস্ক শরণার্থীদেরকে খাবার এবং আশ্রয় দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। গত কয়েকদিনে সিরিয়ার সেনাবাহিনী রাশিয়ার বিমান হামলার সহায়তায় আলেপ্পোর লড়াইয়ে কয়েক দফায় অগ্রগতি অর্জন করেছে। সরকারি বাহিনীর এ অভিযানে অচিরেই শহরটি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, লড়াইয়ের মুখে পালানো ২০ হাজার সিরীয় বাব আল-সালাম সীমান্ত পারাপার এলাকায় জড়ো হয়েছে। আরও প্রায় ৫ থেকে ১০ হাজার উদ্বাস্তু মানুষ তুরস্ক সীমান্তের কাছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিরীয় শহর আজাজ এ জড়ো হয়েছে। তবে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী সীমান্তে জড়ো হওয়া শরণার্থীর সংখ্যা ১৫ হাজার বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তুরস্ক তাদেরকে খাবার এবং আশ্রয় না দিয়ে ছেড়ে দেবে না। তবে তাদেরকে দেশে প্রবেশ করতে দেওয়ার নিশ্চয়তা তুরস্ক দিতে পারবে না।
আলেপ্পোর লড়াইয়ে সরকারি বাহিনী শুক্রবার আরও অগ্রগতি অর্জন করেছে। উত্তরের রাতিয়া শহরটি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে পুনর্দখল করেছে সেনারা। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে বিদ্রোহীদের অবরোধ ভেঙে দুটো শহর দখল করে আরও বড় জয় পায় সেনাবাহিনী। এপি, বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন