বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

চীনকে আন্তর্জাতিক রীতি ভঙ্গের পরিণাম ভোগ করতে হবে

প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : চলমান জি-টুয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফরে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সফররত অন্য বিশ্বনেতাদের লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হলেও সে তালিকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তিনি। এমনকি চীনের হ্যাংঝু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশটির কর্মকর্তাদের বাজে ব্যবহারের সম্মুখীন হন বারাক ওবামার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ওবামা। তিনি বলেছেন, চীনের উত্থানকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করলে বেইজিংকে এর পরিণাম ভোগ করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে বারাক ওবামার একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন সিএনএনের সাংবাদিক ফরিদ জাকারিয়া। গত রোববার টেলিভিশনে প্রচারিত ওই সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেন, যখন নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যু সামনে আসে, আপনি যদি সমুদ্রসীমা বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, তাহলে আপনি ফিলিপাইন বা ভিয়েতনামের চেয়ে বড় দেশ হতে পারেন; কিন্তু আপনি পেশীশক্তি প্রদর্শন করতে পারেন না। আপনাকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে হবে। বারাক ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক পরিসরে চীনের কাছ থেকে বৃহত্তর দায়িত্বপূর্ণ আচরণ প্রত্যাশা করে। তিনি বলেন, শুধু নিজ জনগণের জন্যই নয়, বরং ব্যাপক পরিসরে আন্তর্জাতিক সমস্যা ও সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন কিংবা ইবোলার মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় চীনের কাছ থেকে আরও দায়িত্বপূর্ণ আচরণ প্রত্যাশিত। কার্বন নিঃসরণ কমাতে শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের কাছে পরিকল্পনা পেশ করে দুই দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের পেশ করা প্রস্তাব সম্পর্কে ওবামা বলেন, আমি মনে করি ইতিহাস এর মূল্যায়ন করবে। চীনের আচরণ সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরের মতো বিষয়গুলোতে যখন আমরা তাদেরকে আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করতে দেখি অথবা কিছু ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক নীতিতে এমনটা দখি এসব ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান বেশ দৃঢ়। আমরা তাদেরকে ইঙ্গিত দিয়েছি যে, তাদেরকে এর পরিণাম ভোগ করতে হবে।
চীনে জি-টুয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাই, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট মাইকেল টেমার, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেসহ বিশ্বনেতাদের লালগালিচা সংবর্ধনা দেয় বেইজিং। অথচ এর ব্যতিক্রম ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
ওবামা যখন হ্যাংঝৌ বিমানবন্দরে পৌঁছান তখন তাকে মোটেও অভ্যর্থনা জানায়নি চীনা কর্তৃপক্ষ। বরং পরোক্ষে চীনা কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়েন তিনি। স্বীকার হন উগ্র চীনা জাতিয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির। লাল গালিচা তো নয়ই, তাকে বিমান থেকে নামার জন্য রোলিং স্টেয়ারকেইজ (আলাদা সিঁড়ি) দেয়ার মতো কূটনৈতিক শিষ্টাটার প্রদর্শনেও অস্বীকৃতি জানানো হয়। এ নিয়ে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের বিবাদও হয়। বারাক ওবামা অবশ্য এ ব্যাপারে কূটনৈতিক উত্তর দিয়েছেন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বহরের আকার থেকে চীন হয়তো হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল। এ নিয়ে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস স্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট ওবামাকে স্বাগত না জানানোর কারণে চীনের ওপর তিনি বিরক্ত হয়েছেন। সাংবাদিকদের রাইস বলেন, যা হয়েছে তা ধারণাতীত।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ওবামা এবং মার্কিন কর্মকর্তারা চীন পৌঁছানোর পর যে ধরনের অভ্যর্থনা পেয়েছেন তা খুবই বিবর্ণ।
সব মিলিয়ে এই লালগালিচা সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও জোরালো হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে চীনের প্রতি পরিণাম ভোগ করার মার্কিন হুঁশিয়ারিতে। সূত্র : সিএনএন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Ali Reza ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৪৫ এএম says : 0
আমেরিকার পাওনা পরিশোধের দিন শুরু হয়েছে। চীন সঠিক কাজটিই করেছে, চীনকে সব রাস্ট্রের অনুসরণ করা উচিৎ।
Total Reply(0)
Farhad Aziz Kiron ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৪৭ এএম says : 0
being a president they should respect.... its not a good desicion for china......
Total Reply(0)
Harun Rashid ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৪৯ এএম says : 0
হুম্মম.......আন্তর্জাতিক রীতিনীতি আর আইন........??? যখন এসব রীতিনীতি আর আইন কে পদদলিত করে, মিথ্যা অযুহাতে ইরাক আক্রমণ করে পাচ লক্ষ মানুষ আপনারা হত্যা করেছিলেন সেদিন কোথায় ছিলো এসব রীতিনীতি আর আইন.........পরিণাম ভোগ করার সমায় তো এখন আপনাদের.......... সব রীতিনীতি ভাংগার মূল হোতা তো আপনারা..........
Total Reply(0)
Rasel H Rahman ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৪৯ এএম says : 0
আমরা চীনের পাশে আছি।
Total Reply(0)
Hasib Hasan ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৫১ এএম says : 0
খোদ আমেরিকা নিজ দেশের অর্থনীতিতে চিনের প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত !
Total Reply(0)
monir khan ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১:০২ পিএম says : 0
akon Abar varot ke sate nibe oba-ma
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন