শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বাইডেন-ইমরান যোগাযোগ কেন বিলম্বিত হচ্ছে?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২১, ৭:৪৭ পিএম

২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তখন তিনি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে টেলিফোন করতে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেয়ার জন্যও অপেক্ষা করেননি।

এই টেলিফোন কলটিই তখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। পাকিস্তানের সরকারী পাঠ্য অনুযায়ী সে সময় ট্রাম্প নওয়াজকে ‘ভয়ঙ্কর লোক’ হিসাবে মন্তব্য করেছিলেন। তা সত্ত্বেও, এটি অবাক করা কোন বিষয় নয় যে, ৯/১১ পরবর্তী সময়ে আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন দেয়া নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টদের কাছে অগ্রাধিকার পেত। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেই রীতি অনুসরণ করেননি এবং ২০ জানুয়ারি থেকে হোয়াইট হাউসে কাজ শুরুর পরেও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে এখনও কথা বলেননি।

বাইডেন কেন ইমরানকে ফোন দেননি, সে সম্পর্কে কোন পক্ষের থেকেই এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি, যদিও তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা পাকিস্তানের বেসামরিক ও সামরিক উভয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছেন। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন নির্ভরযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছে যে, বাইডেন পাকিস্তানের বিষয়ে ‘অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা’ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং ফোন করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে কথা বলার আগে সেই পর্যালোচনার ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন।

বাইডেনের এই পর্যালোচনার আদেশ দেয়ার পেছনে কারণ হ’ল, তিনি মনে করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির প্রধান হিসাবে হিসাবে ইসলামাবাদের সাথে কাজ করার কারণে পাকিস্তানের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ হয়ে থাকতে পারেন। তিনি ছিলেন কেরি-লুগার অ্যাক্টের সহ-লেখক যার মাধ্যমে সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামার প্রথম মেয়াদে পাকিস্তানকে দেয়া বেসামরিক সহায়তা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। তিনি প্রায়শই এই উদ্দেশ্যে ইসলামাবাদ ভ্রমণ করেছিলেন।

সূত্র জানায়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই মুহূর্তে পাকিস্তান-মার্কিন সম্পর্ক কোথায় রয়েছে এবং কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় তা বোঝার জন্য সংশ্লিষ্ট মার্কিন বিভাগের কাছ থেকে নতুন তথ্য চেয়েছেন। এই বিষয়ের সাথে পরিচিত একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য পাওয়ার পরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে যোগাযোগ করবেন।’

পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত পরিবর্তন করতে চাইছে। অতীতের মতো সম্পর্কের বদলে, ইসলামাবাদ চায় কেবল সুরক্ষা এবং আফগানিস্তানের দিকে মনোনিবেশ করার চেয়ে অর্থনীতি ও বাণিজ্যের ভিত্তিতে সম্পর্ক স্থাপন করা। এ বিষয়ে জেনেভায় সাম্প্রতিক এক বৈঠকে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত পাকিস্তানের জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা ডক্টর মঈদ ইউসুফ তার মার্কিন সুরক্ষা উপদেষ্টা জেক সুলিভানকে একটি ‘পরিকল্পনা’ উপস্থাপন করেছেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভবিষ্যতের সহযোগিতার জন্য পাকিস্তানের অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে ধারণা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ওয়াশিংটন চায় যে ইসলামাবাদ প্রথমে আফগান লড়াইয়ে ভূমিকা পালন করবে।

ধারনা করা হচ্ছে, মার্কিন-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আগামী মাসগুলোতে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কীভাবে উদ্ভূত হবে তার উপর নির্ভর করবে। বলা হয়ে থাকে যে, অন্য কোন ক্ষেত্রে কোনও ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানকে জোরালো ভূমিকায় দেখতে চায়। সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন