বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিমান দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে মারা যান সুভাস বসু

প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিমান দুর্ঘটনাতেই নিহত হয়েছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। এমনটাই জানিয়েছে নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য সম্পর্কে তদন্ত করা ইংল্যান্ডের একটি ওয়েবসাইট। সেখানে বলা হয়েছে, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট রাত ১১টা নাগাদ হাসপাতালে মারা যান এই স্বাধীনতা-সংগ্রামী।
লন্ডনের সাংবাদিক আশিস রায়ের তৈরি ওই ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, মোট পাঁচজন দুর্ঘটনার তত্ত্বকে সমর্থন জানিয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন নেতাজির এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী, দুজন জাপানি চিকিৎসক, একজন দোভাষী এবং তাইওয়ানের এক নার্স। ওয়েবসাইটের মতে, তারা সকলেই জানিয়েছিলেন, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ)-র প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যু হয়।
নেতাজির ঘনিষ্ঠ সহযোগী কর্নেল হাবিবুর রেহমান খান জানিয়েছিলেন, দুর্ঘটনার সময় তিনি নেতাজির সঙ্গেই ছিলেন। নেতাজি মারা গেলেও, তিনি কোনক্রমে বেঁচে যান। হাবিবুর জানান, মৃত্যুর আগে নেতাজি তাকে কী বলেছিলেন, তাও জানান তিনি। হাবিবুরের কথায়, মৃত্যু নিকট জেনে তিনি আমাকে তার একটি বার্তা দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে বলেন। বার্তায় নেতাজি বলেছিলেন, আমি দেশের স্বাধীনতার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছি এবং তা পালন করতে গিয়েই প্রাণ দিচ্ছি। হে দেশবাসী, স্বাধীনতার লড়াই চালিয়ে যান। খুব শীঘ্রই ভারত স্বাধীন হবে। আজাদ হিন্দ দীর্ঘজীবী হোক।
১৯৪৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুই পুলিশ অফিসার ফিনে ও ডেভিসের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল ব্যাংকক, সাইগন ও তাইপেইতে যান। দলে ছিলেন দুই বাঙালি দুঁদে গোয়েন্দা এইচ কে রায় ও কে পি দে। তারা জানান, বিমান দুর্ঘটনাতেই মারা যান নেতাজি। ওই তদন্তকারী দলের হাতে আসে একটি টেলিগ্রাম। যা জাপানি সেনার তৎকালীন প্রধান পাঠিয়েছিলেন। সেখানে নেতাজিকে ইংরেজি অক্ষর ‘টি’ বলে সম্বোধন করা হয়। ২০ অগাস্টের ওই তারবার্তায় বলা হয়, টোকিও যাওয়ার পথে তাইহোকু (তাইপেয়িকে এ নামেই ডেকে থাকেন জাপানিরা)-তে দুপুর ২টা নাগাদ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। সেখানে গুরুতর জখম হন ‘টি’। এরপর সেদিনই রাত ১১টা নাগাদ মারা যান ‘টি’।
পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৪৬ সালের মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে ব্রিটিশ সেনার জে জি ফ্রিগেস টোকিওতে ছয় জন আধিকারিককে নেতাজির মৃত্যু সম্পর্কে জেরা করেছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন নানমোন সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসক সুরুতা, যিনি নেতাজির চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। বিমান দুর্ঘটনার পর গুরুতর জখম নেতাজিকে এই হাসপাতালেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
সুরুতা জানিয়েছিলেন, নেতাজি তাকে ইংরেজিতে পাশে বসার অনুরোধ করেন। কিন্তু, সন্ধ্যে সাতটার পর নেতাজির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং তিনি কোমায় চলে যান। চিকিৎসকের বক্তব্য সমর্থন করেন সেখানকার নার্স সান পি শা। জানান, তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নেতাজির পুড়ে যাওয়া শরীরের জ্বলন কমাতে শরীরে তেল লাগাতে। নার্স জানিয়েছেন, তিনি তাই করেছিলেন। কিন্তু নেতাজিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ১৯৪৫ সালের ২২ আগস্ট সামরিক বন্দোবস্তের মধ্যে নেতাজির শেষকৃত্য হয়। ২৩ অগাস্ট তার দেহভস্ম সংগ্রহ করা হয়। সূত্র : এবিপি আনন্দ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন