সংসদে কেন্দ্রীয় সরকার বনাম তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে। বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের বিরুদ্ধে রাজ্যসভায় ভাঙচুর চালানো এবং নিরাপত্তারক্ষীদের জখম করার অভিযোগ এনেছে সরকারপক্ষ। তৎক্ষণাৎ যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের দাবি, বিরোধীদের কন্ঠরোধ করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে শুক্রবারও প্রবল উত্তপ্ত হয়েছে সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশন। তবে এদিন রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। আর তাতেই জোটের অঙ্ক দেখল নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ আনা হয়, বুধবার দিন সংসদের অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার পরে বলপূর্বক রাজ্যসভায় ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাসপেন্ড হওয়া ৬জন সাংসদ। তাদের বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তখন দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। তার জেরে কাচ ভেঙে যায়, হাতে চোটও পান এক মহিলা মার্শাল। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের আচরণের তীব্র নিন্দা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী। তারপরেই অভিযোগে সরব হয় কেন্দ্রীয় সরকার।
গতকাল চাউর হয়ে যায়, বড় শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। কারণ তার বিরুদ্ধেই লিখিত অভিযোগ করেছেন মহিলা মার্শাল। পাল্টা ময়দানে নামে গোটা তৃণমূল কংগ্রেস শিবির। রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন একটি ভিডিও টুইট করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আহত হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলে পুরুষ নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক করছেন অর্পিতা নিজেই।
রাজ্যসভার সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে জানতে চাওয়া হয়, সংসদীয় রুলে থাকলেও অধিবেশন মুলতবি হওয়ার পরে নিজেদের ব্যাগ এবং নথি নেওয়ার জন্য কেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদদের সভাকক্ষে ঢুকতে দেওয়া হয়নি? তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার চিফ হুইপ সুখেন্দুশেখর রায় প্রশ্ন তোলেন, মহিলা সাংসদদের বাধাদান করতে কেন এগিয়ে এসেছিলেন পুরুষ নিরাপত্তারক্ষীরা?
তখনই তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করে কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করে কংগ্রেস। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘বিক্ষোভ দেখানো সংসদীয় গণতন্ত্রের অংশ। আর যেভাবে ৬ জন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। সভা শেষে নিজেদের জিনিস নেওয়ার জন্য সভাকক্ষে ঢুকতে না দেওয়াটা আরও বড় অন্যায়। গোটা ঘটনার সাক্ষী আমি নিজে, সঙ্গে ছিলেন সাংসদ জয়া বচ্চনও।’
বিজেপির প্রতিনিধি সাংসদ মহেশ জেঠমালানির অবশ্য দাবি, রাজ্যসভায় শৃঙ্খলাভঙ্গ, ভাঙচুর চালানো এবং নিরাপত্তারক্ষীকে আঘাত করা, পাবলিক প্রপার্টি আইন অনুযায়ী মামলা করা হোক তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের বিরুদ্ধে। এদিন দুপুরে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের গোপনে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি। সরকারের দেওয়া এই প্রস্তাব অবশ্য প্রত্যাখ্যান করেছে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদরা। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন