তালেবান সম্পর্কে ভারতীয় গণমাধ্যমে এতদিন ধরে যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও ভয়াবহতা এবং নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছিল তাতে সজোরে আঘাত করলেন কলকাতার যুবক তমাল ভট্টাচার্য। তালেবানকে যে হিংস্র হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিল তা নিমিষেই ভুল প্রমাণ করেন আফগান ফেরত এই ভারতীয় শিক্ষক। তালেবান ও ইসলামি আইনকানুনের ভুইসী প্রসংশা করে তিনি ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অন্যদিকে, অকপটে নিজের চোখে দেখা বাস্তবতাকে তুলে ধরে ফেসুবকে নিজেও প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।
কাবুলের একটি আন্তর্জাতিক স্কুলের শিক্ষক তমালের সুযোগ হয়েছিল তালেবানদের সাথে একান্ত সময় কাটানোর। দেশে ফিরে মিডিয়ার সামনে তালেবানরা ভারতীয়দের সাথে কত ভালো ব্যবহার করেছে, ভালো খেতে দিয়েছে, নিরাপত্তা দিয়েছে সেই কথা অকপটে স্বীকার করেন তিনি। বলেন, ‘তালেবান আমাদের হেফাজত-খেদমত দুটোই করেছে। মিডিয়ার খবরের সথে বাস্তবের কোনো মিল নেই। ইসলামই প্রথম ধর্ম যেটি নারীদের সমোধিকার দিয়েছে। কাবুলে সিঙ্গেল গুলিও চলেনি, গুলি চালিয়েছে মার্কিন সেনারা। কাবুলে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর হয়েছে। তালেবানরা সম্পূর্ণ নতুন একটা দেশ গড়তে চাইছে। তারা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ওজনে ঠকানো বন্ধ হয়ে গেছে।
মিডিয়ায় তালেবান সম্পর্কে ছড়ানো নানা গুজব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এসব তথ্য জানান তমাল। যদিও তমালের মুখে তালেবানদের এমন প্রশংসাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না এক শ্রেণির ভারতীয়রা। তালেবানদের গুণগান গাওয়ায় তমালকে কটাক্ষ করে সমালোচনায় ভাসান এসব উগ্রপন্থীরা।
ফেসবুকে তমালে বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘গত কয়েকদিন ধরে ভারতীয় মিডিয়া ধারাবাহিকভাবে তালি****+বানদের ভয়ংকর ড্রাকুলা, দৈত্য-দানব হিসেবে প্রচার করে আসছে। কিন্তু কা**বুল ফেরত এই ভারতীয় শিক্ষক ভারতীয় মিডিয়ার মুখে পুরাতন চটি দিয়ে কষে চপোটাঘাত করলো।’’
জাকির আখোন্দ লিখেছেন, ‘‘পৃথিবীতে মাজলুম মুসলমানরা ও ইসলামপন্থীদের উপর মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে কিন্তু দুঃখজনক মুসলমান ও আলেমদের পক্ষে কোনো আন্তর্জাতিক মিডিয়া নেই তাদের তথ্য সন্ত্রাসকে মোকাবেলা করার জন্য!
এ-ই মিডিয়াগুলো এখন মায়া কান্না করছে। কিন্তু যখন কাশ্মীরে গণহত্যা হচ্ছে. গণধর্ষণ হচ্ছে. ভারতের মুসলমানদের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে! তাদেরকে ধর্মকর্ম পালন করতে দেওয়া হচ্ছে'না!! তখন এ-ই তথ্য সন্ত্রাসওয়ালা মিডিয়াগুলো চুপ করে বসে থাকে!!! এ-ই সমস্ত মিডিয়াগুলোকে আমি সঠিক মিডিয়া মনে করি'না! মনে করি ইসলাম বিরোধী শক্তির পৃষ্ঠপোষক!’’
আরএস ওবায়দুল্লাহ অভি লিখেছেন, ‘‘সত্য একদিন প্রকাশিত হবে এবং সব ষড়যন্ত্রকারীর ষড়যন্ত্র বানচাল হবে ইনশাআল্লাহ! ভারতীয় ও আমাদের দেশের কিছু হলুদ মিডিয়ার মিথ্যাচারের জবাব এই শিক্ষকের বক্তব্যই যথেষ্ট। ওরা তিলকে তাল পাকিয়ে ভুয়া সংবাদ পরিবেশন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। ধন্যবাদ আপনাকে সত্যকে তুলে ধরার জন্য।’’
ড. ইমরান খান লিখেছেন, ‘‘উনি অত্যন্ত স্পষ্টভাষী মানুষ, ভাল লেগেছে উনি একদম উনার সত্য উপলব্ধিগুলো ব্যখ্যা করেছেন, যার ফলে মিডিয়া যে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছিল সেটা অনেকটাই ভুয়া মিথ্যা বলে প্রতিয়মান হল।’’
নূর আলম হুসাইন নূর লিখেছেন, ‘‘দাঁত ভাঙ্গা জবাব,সত্য প্রকাশিত হয়েছে শিগ্রইয় তা বিজয় লাভ করবে?আর যারা ইসলামের শত্রু তারা সত্য প্রকাশের ফলেও চিরোকাল বিরোধীতা করবে? কারন তারা শয়তানের অনুসারী এবং তাদের কঠিন শিকোল দ্ধারা পাকরাও করা হবে?এটা প্রমানিত হলো মিডিয়া গুলো আমেরিকা এবং ভারতের দালালি করছে।’’
বোরহান উদ্দীন রানা লিখেছেন, ‘‘শুধু তালেবান কেনো সউদী আরবকে ও মিডিয়া এমন ভাবে উপস্থাপন করে মনে হয় ইসলামের শত্রু তারা৷। অথচ মিডিয়ার এসব মিথ্যা ও সউদী বিদ্বেষী কর্মকান্ডকে মানুষ চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে যাচ্ছে।সাথে সাথে সউদী রাজপরিবার সহ সউদি প্রশাসন কে গালি দিয়ে যাচ্ছে৷।’’
এদিকে তমাল অকপটে সত্যকে স্বীকার করায় যেসব ভারতীয়র চরম গাত্রদাহ হচ্ছে তাদের অন্যতম সত্যজিৎ চ্যাটার্যি। কলকাতার এই সাংবাদিক তমালের সমালোচনা করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘ইসলামীক মৌলবাদ আর বামপন্থীদের সম্পর্ক হল বাবু আর বাইজী সম্পর্কের মতন। চীন পাকিস্তান সম্পর্ক নয় তমাল বুঝিয়ে দিল। ঘরে চে । মুখে তালিবস। বাঁচার সময় মোদী। লাইক চীন পাকিস্তান।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন