শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সঙ্কটে ঐতিহ্যবাহী পার্সিয়ান গালিচা শিল্প

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেকটাই কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হচ্ছে ইরানের ঐতিহ্যবাহী গালিচা শিল্পকে। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাস মহামারী এ সংকটকে আরো তীব্র করে তুলেছে। সম্প্রতি এসব প্রতিবন্ধকতা সামলে সংকট কাটিয়ে ওঠার নতুন উপায় বের করার চিন্তা করছেন ইরানের গালিচাশিল্পীরা। বর্তমানে এ শিল্পীরা জাপানের সর্বত্র প্রচলিত গালিচা ‘জাবুটন’-এর আদলে গালিচা তৈরির প্রতি মনোযোগ দিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী পার্সিয়ান গালিচার এসবক্ষুদ্র সংস্করণ জাবুটনের বিকল্প হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। খবর জাপান টুডে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাজারে ভারতীয় ও তুর্কি গালিচার প্রভাবে অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে পার্সিয়ান গালিচার চাহিদা। ফলে বৈশ্বিক বাজারে পার্সিয়ান গালিচার বিক্রি পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় প্রায় অর্ধেক কমেছে। তেহরানে অবস্থিত শীর্ষ গালিচা বুনন প্রতিষ্ঠান জোল্লানভারির তাঁতি মোহাম্মদ জাফরি বলেন, ‘আমরা আমাদের বুনন করা ৬০ শতাংশ পণ্য জাপানে রফতানি করে থাকি। তেহরানের ওপর মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে বর্তমানে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো ধরনের রফতানি করতে পারি না। এর আগে আমাদের গালিচার সবচেয়ে বড় বাজার ছিল দেশটি।’ ইরানের বার্তা সংস্থা মেহেরের বরাতে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্বের ৩০টি দেশে পার্সিয়ান গালিচা রফতানি হয়ে থাকে। এসব দেশের মধ্যে চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত এ গালিচার অধিকাংশের রফতানি গন্তব্য ছিল জাপান। তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্পর্কের একটি অন্যতম উপাদান ছিল ইরানে উৎপাদিত এসব ঐতিহ্যবাহী পার্সিয়ান গালিচা। ২০১৫ সালে তেহরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত পারমাণবিক চুক্তিসংক্রান্ত আলোচনা চলাকালে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরানের উত্তেজনা হ্রাস পেতে শুরু করেছিল। এ সময়ে বার্ষিক ৩০ কোটি ডলারের পার্সিয়ান গালিচা আমদানির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ঐতিহ্যবাহী এসব গালিচার শীর্ষ বাজারে পরিণত হয়েছিল। তবে ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তেহরানের সঙ্গে পরমাণুসংক্রান্ত আলোচনা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। এর পরই তেহরানের ওপর আরোপিত বিভিন্ন অবরোধের কারণে পার্সিয়ান গালিচা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মহামারী তাঁতিদের জীবনে আরো দুর্দশা বয়ে আনে। তেহরানের একটি গালিচা বিক্রয়কেন্দ্রের মালিক আলি জাহান বলেন, ‘মহামারী পরিস্থিতির কারণে বিদেশ থেকে ক্রেতারা আসতে পারছেন না। বিক্রয়কেন্দ্রে বিদেশী ক্রেতার সংখ্যা একদম শূন্যতে নেমে এসেছে। পূর্বে প্রতি মাসে ৫০ জন বা তার বেশি ক্রেতা এসব গালিচা ক্রয়ের জন্য আসত।’ হাতে বুনন করা এসব ঐতিহ্যবাহী গালিচা ইরানের মহিলাদের আয়ের একটি অন্যতম উৎস ছিল। তবে নিষেধাজ্ঞা ও মহামারীর কারণে এসব গালিচার চাহিদা ও বিক্রি হ্রাস পাওয়ায় ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পের ভবিষ্যৎ অনেকটা ধোঁয়াশা করে তুলেছে। ইরানের গালিচা শিল্পের এমন দুর্দশা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও তুরস্কের গালিচা উৎপাদকরা। জাপান টুডে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন