রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

রাজধানীতে যুব সমাবেশে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন

আমরা বিদ্যুৎ চাই, তবে জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়

প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান সরকারকে জাতীয় স্বার্থবিরোধী আখ্যা দিয়েছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, খুলনার রামপাল ও পাবনার রূপপুরে সরকারের প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ প্রকল্প দেশের ‘স্বার্থ বিরোধী’। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকালে এক যুব সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমরা বিদ্যুৎ চাই, বিদ্যুৎ আমরা উৎপাদন করতে চাই কিন্তু তা জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়। আজকে যদি রামপালে হয়, সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে, এতে জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দেয়া হবে।
আজকে রূপপুরে পারমাণবিক কেন্দ্র প্রকল্প স্থাপনের জন্য সরকার এগুচ্ছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র অতি উচ্চমূল্যে ঋণ দিয়ে করা হচ্ছে এবং এদেশের মানুষের ঘাড়ে উচ্চ মাত্রায় সুদের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হচ্ছে। এসব জাতীয় স্বার্থবিরোধী। বর্তমান সরকারকে ‘জাতীয় স্বার্থ’ ও ‘গণতন্ত্র’ বিরোধী সরকার আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে সকলকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বানও জানান খন্দকার মোশাররফ। আজকে জনগণের মনের কথা, তারা এই স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। এই ফ্যাসিবাদী সরকারের হাত থেকে মুক্তি পাবার জন্য জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সেই আন্দোলনে যুবকদের অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তে জাতীয়তাবাদী যুব দলের উদ্যোগে কারাবন্দি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মুক্তির দাবিতে এই যুব সমাবেশ হয়।
আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে দলের অবস্থান তুলে ধরে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। এজন্য একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে। তাহলেই জনগন একমাত্র তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন, জনগণ তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারবেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত হবে। আমরা বলতে চাই, আপনারা (সরকার) যদি একতরফা নির্বাচন করতে চান, পছন্দমতো নির্বাচন কমিশন গঠন করতে চান, তা জনগণ মেনে নেবে না। সেটা হবে আবারো ১০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচনের পূনরাবৃত্তি ঘটবে যা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
নিরপক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করার প্রস্তাবের কথা ব্যাখা করে তিনি বলেন, ‘‘এই পর্যন্ত সংসদে প্রতিনিধিত্ব রাজনৈতিক দলের সাথে আলাপ-আলোচনা করে জনগণের সমর্থন নিয়ে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। গণতন্ত্রের স্বার্থে, দেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে, দেশের জনগনের স্বার্থে আগামী নির্বাচন সকল দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন হতে হবে।
সিলেটে ছাত্রলীগের নেতার আক্রমণে খাদিজা বেগম নার্গিসের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে খাদিজাকে কী নির্মমভাবে দা দিয়ে কুপিয়ে তাকে আহত করেছে। সে আজকে জীবন-মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এতো জঘন্য, এতো বর্বর মানসিকতা একমাত্র ছাত্রলীগের নেতাদের পক্ষেই ধারণ করা সম্ভব। কেননা তারা দেখছে তাদের প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের মতামত না নিয়ে, ভোট না নিয়ে যা-ইচ্ছা তা করছেন, গায়ের জোরে তিনি দেশ পরিচালনা করছেন।
সেজন্য আজকে ছাত্রলীগের কর্মী, যুব লীগের কর্মীরা সাহস পাচ্ছে, যা-ইচ্ছা তা করে বেড়াচ্ছে। খাদিজা বেগম তার একটি মাত্র উদাহরণ। সরকারি দলের মহিলা নেত্রীরা এই নির্মম একটি নির্যাতন হয়েছে, অত্যাচার হয়েছে তার প্রতিবাদ না জানিয়ে আইসিইউতে গিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে তারা সেলফি তুলছে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের মনোবৃত্তি।
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ‘নিশ্চিহ্ন’ ও ‘দূর্বল’ করতে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘অসংখ্য মিথ্যা মামলা’ দিয়ে ‘সারাদেশটাকে বৃহত্তর কারাগারে’ পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেন খন্দকার মোশাররফ।
একসঙ্গে দলের ভাইস চেয়ারম্যান নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ কারাবন্দি নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবিও জানান তিনি।
সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সভাপতিত্বে পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, যুব দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল খালেক, রবিউল ইসলাম লাভলু, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, রফিকুল আলম মজনু, মাহবুবুর হাসান পিংকু, এসএম জাহাঙ্গীর প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন