ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে না পারার অভিযোগে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের দায়ের করা পৃথক দুটি মামলা খারিজ করে দিয়েছেন জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত। নেদারল্যান্ডের রাজধানী দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এ রায় দেন। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী টনি ডিব্রাম আদালতকে বলেন, আমার দেশে বেশ কিছু দ্বীপ স্রেফ হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে এবং যেসব টিকে রয়েছে সেগুলো হাজার বছরের জন্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশগুলোর পরমাণু অস্ত্র বিস্তারবিরোধী চুক্তি অনুযায়ী যা যা করণীয় তা করতে আহ্বান জানিয়েছে পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতার নির্মম শিকার দেশ মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ। আদালতের বিচারক রনি আব্রাহাম তার রায়ে বলেন, আদালতে দু’পক্ষ উপস্থিত না থাকার কারণে বিচারের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে আপত্তি জানিয়েছে তা আদালত সমর্থন করছে এবং এ মামলার বিচারকাজ না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিছুক্ষণ পর ভারতের বিরুদ্ধে দায়ের করা একই ধরনের আরেকটি মামলাও খারিজ করে দেয়ার কথা বলেন বিচারক। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ জাতিসংঘের আদালতে মামলার মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্রের বৈশ্বিক হুমকির বিষয়টি নতুন করে সবার নজরে আনার চেষ্টা করছিল। কিন্তু আদালতের নয়জন বিচারকের মধ্যে সাতজনই এ বিচারের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত দেশ দু’টির আপত্তি সমর্থন করায় দুটি মামলাই খারিজ হয়ে যায়। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ প্রশান্ত মহাসাগরের অবস্থিত একটি ছোট্ট দ্বীপ দেশ। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪৬-৫৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে একাধিক পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। এতে প্রবাল দেশটিতে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়। ১৯৬৮ সালের পরমাণু অস্ত্র বিস্তারবিরোধী চুক্তি পালন না করায় মাজুরো (মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী) ২০১৪ সালে আইসিজেতে ৯টি পরমাণু শক্তিধর দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। তবে ভারত ও পাকিস্তান ছাড়া বাকি সাত দেশ-চীন, ফ্রান্স, ইসরাইল, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য আইসিজেকে স্বীকৃতি না দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা গৃহীত হয়নি। আর ইসরাইল আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্র থাকার কথা অস্বীকার করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা গৃহীত হয়নি। এদিকে ভারত-পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র বিস্তারবিরোধী চুক্তিতে স্বাক্ষর না করলেও তারা আইসিজেকে অনুসমর্থন করেছে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও গৃহীত হল না। মামলার শুনানিতে অংশ নিয়ে মাজুরোর আইনজীবীরা ১৯৬৭ সালের পর দেশটির দুই প্রবাল দ্বীপ বিকিনি এবং ইনিউয়েটাকে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন। এএফপি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন