ইনকিলাব ডেস্ক : মরক্কোর প্রধানমন্ত্রী আবদেলিলাহ বেনকিরানের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন মধ্যপন্থী ইসলামী দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (পিজেডি) দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত ৯০ শতাংশ আসনের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। এর ভিত্তিতে মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেছে। এতে ৩৯৫টি আসনের মধ্যে পিজেডি পেয়েছে ৯৯টি, অথেন্টিসিটি এবং মডার্নিটি পার্টি (পিএএম) ৮০টি এবং রক্ষণশীল ইসতিকলাল পার্টি পেয়েছে ৩১ আসন। নির্বাচনী এ ফলাফল থেকে স্পষ্ট ইসলামপন্থী দল পিজেডিকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে জোট সরকার গঠন করতে হবে। মরক্কোর নারী ও তরুণদের জন্য নির্ধারিত ৯০টি আসনের ভোট গণনা এখনও চলছে। মরক্কো একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের দেশ। সেখানে সরকারের বেশিরভাগ নির্বাহী ক্ষমতা রাজার হাতে কুক্ষিগত।
এদিকে, জয়ী হওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় পিজেডি জানিয়েছে, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সংস্কারের যে ধারা তারা সৃষ্টি করেছে, দ্বিতীয় মেয়াদে তারা সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় জোর দেবে। রক্ষণশীল ইসতিকলাল পার্টি ৩১ আসন নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। অন্যান্য দলগুলোর মধ্যে ৩০৫টি আসন বণ্টন করা হবে। এর পাশাপাশি নারীদের জন্য ৯০টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। দলগুলোর তালিকা অনুযায়ী আনুপাতিক হারে আসনগুলো বণ্টন হবে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবদেলিলাহ বেনকিরানের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন পিজেডি ২০১১ সালে জোটগত নির্বাচনের মাধ্যমে সবচে বড় দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য মরক্কোতে সাম্প্রতিক সময়ে বিক্ষোভ হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে রাজা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের হাতে কিছুটা ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছেন। তবে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দেশটির ৯৫টি নির্বাচনী জেলায় নেতিবাচক চিত্র দেখা গেছে। বেশিরভাগ ভোটারই সীমিত গণতন্ত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। মাত্র ৪৩ শতাংশ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এদিকে নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ক্ষমতাসীন পিজেডি এবং প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পিএএম কাছাকাছি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ফলে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে পিজেডিকে অন্তত তিনটি ছোট দলের সঙ্গে জোট করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সাংবিধান সংস্কারের পর মরক্কোয় দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। ২০১০ সালে তিউনেসিয়া থেকে শুরু হওয়া গণআন্দোলন আরব বসন্তের পর ওই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে ইসলামপন্থী দলগুলো জনগণের ভোটে ক্ষমতায় চলে আসে। কিন্তু সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী এবং অভিজাত নাগরিক সমাজের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে একে একে ক্ষমতা হারায় মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তিউনেসিয়ার আন নাহদা। রয়টার্স, আল জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন