জার্মানি বলছে, তারা উত্তর সিরিয়ার একটি শিবির থেকে আটজন নারীকে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনেছে, যারা কথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এ যোগ দিয়েছিলেন। সাথে ২৩ জন শিশুকেও ঐ শিবির থেকে ফেরত আনা হয়েছে। ডেনমার্কের সঙ্গে এক যৌথ তৎপরতার অংশ হিসাবে জার্মানি তাদের ফেরত এনেছে। ডেনমার্কও তিনজন নারী এবং ১৪ জন শিশুকে ফেরত নিয়েছে বলে জার্মান কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস বলেছেন, জার্মানিতে ফেরত আনা এসব নারী এখন কর্তৃপক্ষের হেফাজতে রয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত করা হবে। সিরিয়ায় গিয়ে আইএস-এ যোগ দেয়া কয়েকশ’ ইউরোপীয় এখন উত্তর সিরিয়ায় কুর্দী নিয়ন্ত্রিত শিবিরগুলোতে রয়েছেন।
২০১৯ সালের মার্চে সিরিয়া এবং ইরাকে আইএস আঞ্চলিকভাবে পরাজিত হয়েছে বলে ঘোষণা দেবার পর অভিযুক্ত এসব আইএস যোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা এবং বাস্তুচ্যুত অন্যান্য কয়েক হাজার মানুষকে এসব শিবিরে স্থানান্তর করা হয়।
কী বলছে জার্মান কর্তৃপক্ষ?
জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, উত্তর পূর্ব সিরিয়ার রজ আটক শিবির থেকে আসা নারী ও শিশুরা বুধবার ফ্র্যাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে নামেন। মন্ত্রী মি. মাস বলেন, তারা জার্মানিতে ফেরত আসায় তিনি ‘খুশি’, কিন্তু ‘এ মায়েদের তাদের কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে’।
‘শিশুরা তাদের পরিস্থিতির জন্য দায়ী নয়’ -তিনি বলেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, এসব শিশুর ‘সুরক্ষার বিশেষ করে প্রয়োজন রয়েছে’। সিরিয়ার শিবিরগুলোতে যেসব ইউরোপীয় রয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই আইএস যোদ্ধা বা এই জিহাদি গোষ্ঠীর প্রতি সহানুভ‚তিশীলদের স্ত্রী ও সন্তান বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইউরোপের দেশগুলোর সরকারদের কাছে তাদের দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবার আহŸান জানিয়েছে। তাদের যুক্তি হল, এসব নারী ও শিশুকে শিবিরে রেখে দিলে তাদের অসুস্থ হয়ে পড়ার এবং জিহাদি আদর্শে অনুপ্রাাণিত হবার ঝুঁকি বাড়বে।
জার্মানি ফিনল্যান্ডের সাথে যোগ দিয়ে ডিসেম্বর মাসে পাঁচজন নারী ও ১৮ জন শিশুকে সিরিয়া থেকে জার্মানিতে ফেরত আনে। জুলাই মাসে বেলজিয়ামও ছয়জন নারী এবং দশজন শিশুকে ফেরত নিয়েছে। বেশির ভাগ সরকারই প্রত্যেকটি ঘটনা আলাদাভাবে যাচাই বাছাই করে তাদের ফেরত আনার বিষয়টি বিবেচনা করছে। কিন্তু কোন কোন দেশের সরকার নিরাপত্তা উদ্বেগ থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ব্রিটেনের শামীমা বেগমকে ফেরত নেবার বিষয়টি। ব্রিটিশ স্কুলছাত্রী শামীমা বেগম ২০১৫ সালে আইএস-এ যোগ দেন এবং নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ব্রিটিশ সরকার তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন