ইনকিলাব ডেস্ক : ৮ অক্টোবর জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনরত তরুণদের উপর আধা সামরিক বাহিনীর ছররা গুলিতে আহত হওয়ার পর জুনায়েদ আহমদ নামে ১২ বছরের এক বালক মারা যায়। পরদিন তার জানাযার সময় সমবেত হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা জুনায়েদের লাশ নিয়ে মিছিল করে শহরের শহীদী গোরস্তানে গমন করে। বিদায় হও ভারত, ফিরে যাও; আমরা স্বাধীনতা চাই শ্লোগান দেয় তারা।
নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি যে বিক্ষোভগুলোতে জুনায়েদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল এবং সে পাথর ছুঁড়ত। কিন্তু তার পিতা-মাতা ও বন্ধুদের কাছ থেকে জানা যায় যে বাড়ির বাইরে বাগানে কাজ করার সময় সে গুলিবিদ্ধ হয়। জুনায়েদের মৃত্যু নয়া দিল্লীতে সামান্য আগ্রহ বা উদ্বেগ জাগিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয় যেখানে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী শিবিরগুলোর বিরুদ্ধে ২৯ সেপ্টেম্বর সার্জিক্যাল হামলা চালানো হয়েছে বলে সরকারের ঘোষণার পর রাজনীতিকরা পয়েন্ট স্কোর করায় লিপ্ত রয়েছেন।
বহু বছরের মধ্যে ভারত প্রকাশ্যে এ ধরনের হামলার কথা স্বীকার করল এবং সেগুলোকে পাকিস্তানের মদতকৃত কথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের বিজেপি দলীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কঠোর দৃষ্টিভঙ্গির প্রমাণ হিসেবেই উপস্থাপন করা হয়েছে।
বিজেপি রাজনীতিকরা এ হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক ভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠছেন (যদিও মোদি বলছেন তা উচিত নয়) এবং কংগ্রেস রাজনীতিকরা এ কথা প্রকাশ করে পায়ের নীচে মাটি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন যে আগের বছরগুলোতে তাদের সরকার গোপনে অনুরূপ হামলা চালিয়েছিল।
এদিকে ইসলামাবাদে পাকিস্তান সরকারের একজন মুখপাত্র জুনায়েদের মৃত্যুকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের খারাপ দৃষ্টান্ত বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনা কাশ্মীরে অব্যাহত ভারতীয় নিষ্ঠুরতারই অংশ।
ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের সরকারী প্রতিনিধিরা কাশ্মীরে ভারতের কথিত মানবাধিকার লংঘন এবং পাকিস্তানের বক্তব্যের যথার্থতা বিষয়ে মার্কিন সরকার ও অন্যান্য রাজনীতিকদের কাছে দেন-দরবার অব্যাহত রেখেছেন, কিন্তু জানা গেছে তাদের অল্প সময় দেয়া হচ্ছে এবং ভারতে সহিংস কর্মকা- বন্ধ করতে বলা হচ্ছে।
এমনটাই হচ্ছে কাশ্মীর নিয়ে অন্তহীন এবং প্রায়ই প্রাণঘাতী রূপ নেয়া আন্তর্জাতিক যুদ্ধের অবস্থা যার উৎস মূলত এক সময় স্থায়ী সীমান্তরেখা বলে স্বীকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার অনিবার্যতা মেনে নিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও সরকারের ব্যর্থতা।
পরিবর্তে পাকিস্তান কাশ্মীর ও কখনো কখনো ভারতে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে উৎসাহ দেয় ও সুবিধা প্রদান করে। এর ফলে কাশ্মীরে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় যা পাকিস্তান উৎসাহিত করে।
অধিকাংশ সময় সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক নেতারা ও সামরিক বাহিনী সার্বিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে দিয়ে সন্তোষ বোধ করেন। তারা বলেন যে পাকিস্তানি হামলা খুব বেশী মারাত্মক ও সফল নয় এবং কাশ্মীর উপত্যকায় অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন