করোনা মহামারির প্রভাব কমতে থাকায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি ফিরছে। এছাড়া টিকাপ্রাপ্তদের জন্য বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলতে শুরু করায় বিমান শিল্পেও তেলের চাহিদা বাড়ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লার দামবৃদ্ধি। এ বছর ইউরোপে গ্যাসের পাইকারি দাম তিন গুণের বেশি বেড়েছে। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গ্যাস ও কয়লার পরিবর্তে জ্বালানি তেল ও ডিজেল ব্যবহার করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে চাহিদা বাড়তে থাকায় তেলের দাম বাড়ছে। অপরিশোধিত তেলের মূল্যের তিনটি প্রধান বেঞ্চমার্কের একটি ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম সোমবার ব্যারেল প্রতি প্রায় ৮৬ ডলার হয়েছে, যা ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ। আরেক বেঞ্চমার্ক উত্তর আমেরিকার ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট বা ডাব্লিউটিআইর দাম বেড়ে ব্যারেল প্রতি প্রায় সাড়ে ৮৩ ডলার হয়েছে, যা ২০১৪ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ। ইউরোপের দেশগুলোর আবহাওয়া ঠাণ্ডা হতে থাকায় তেলের চাহিদা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন নিউ ইয়র্কের বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কোম্পামি ওয়েন্ডার কর্মকর্তা এডওয়ার্ড ময়া।
এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের পরিবর্তে তেল ব্যবহারের কারণে বিশ্বে প্রতিদিন গড়ে তেলের ব্যবহার বেড়ে সর্বোচ্চ সাড়ে চার লাখ ব্যারেল হতে পারে বলে মনে করছেন এএনজেড ব্যাংকের বিশ্লেষকরা। তেল, গ্যাসের দাম বাড়ায় ইউরোপের ২৭ লাখের বেশি মানুষ এবারের শীতে তাদের ঘর পর্যাপ্ত গরম রাখতে পারবেন না বলে সতর্ক করে দিয়েছে ইউরোপিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শ্রম বিষয়ক কমিশনার নিকোলাস শ্মিট রোববার বলেছেন, এবারের শীতে ইউরোপে ‘জ্বালানি দারিদ্যের' সংখ্যা বাড়বে। তিনি বলেন, শীতে ঘর গরম রাখতে না পারা অনেক মানুষ ইউরোপে আছে। এবার সেটা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন শ্মিট। এই অবস্থায় ইউরোপের সরকারগুলোকে দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। জার্মানি গত সপ্তাহে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর কর প্রায় ৪০ শতাংশ কমিয়েছে। আর ফ্রান্স নিম্ন আয়ের মানুষদের ঘর গরম রাখার খরচ মেটাতে ১০০ ইউরো দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, ডিপিএ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন