শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পতাকা প্রদর্শন করে চীনের সাহায্য চাইল কাশ্মীরি স্বাধীনতাকামীরা

কারফিউ প্রত্যাহার হলেও ১৪৪ ধারা বহাল, সভা-সমাবেশ করার অধিকারও স্থগিত

প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : এবার ভারত-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে চীন-পাকিস্তানের পতাকা প্রদর্শন করে চীনের সাহায্য চাইল স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরিরা। জুমা নামাজ শেষে বারামুল্লার পুরোনো শহর এলাকায় ওই পতাকা প্রদর্শন করা হয়। কাশ্মীর উপত্যকায় পাকিস্তানি পতাকা ওড়ানোর ঘটনা এর আগে অনেকবারই ঘটেছে। কিন্তু কাশ্মীরের ইতিহাসে এই প্রথম চীনের পতাকা দেখানোর বিরল ঘটনা ঘটল। শুক্রবার জুমা নামাজ শেষে বারামুল্লা, পুলওয়ামা, সোপিয়ান, অনন্তনাগ, বাডগাম প্রভৃতি এলাকায় মানুষজন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। খবরে বলা হয়, গত শুক্রবার জুমা নামাজ শেষে একদল প্রতিবাদী জনতা পাকিস্তান এবং চীনা পতাকা প্রদর্শন করে স্লোগান দেয়া শুরু করে। মুখোশ পরা যুবকরা কমপক্ষে ৪/৫টি চীনা পতাকা প্রদর্শন করে তাদের চীনের সাহায্য প্রয়োজন বলে বার্তা দেয়। ক্ষুব্ধ জনতা এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়লে পুলিশও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। গত শনিবার ভারতের গোয়ায় ব্রিকস সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তার আগেই গত শুক্রবার কাশ্মীরে চীনা পতাকা প্রদর্শন করে সাহায্য চাওয়ার বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রসঙ্গত, শুক্রবার কাশ্মীরের আন্দোলনকারী নেতারা রাজভবন চলো কর্মসূচির ডাক দেন। এ জন্য ভারতীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার সব সড়ক সিল করে দেয়া হয়। শ্রীনগর শহরে কারফিউয়ের মতো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ সময় কমপক্ষে ৬৩ জন প্রতিবাদকারীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। অপর খবরে বলা হয়, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরজুড়ে জারি করা কারফিউ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তবে বহাল থাকছে ১৪৪ ধারা এবং উপত্যকায় জনগণকে সমাবেশের অধিকার দেয়া হচ্ছে না। গত শনিবার কাশ্মীর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হওয়ায় কারফিউ উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় না আসায় জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। এই আইনের মাধ্যমে জনগণের সমাবেশের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। এক পুলিশ কর্মকর্তা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কাশ্মীরের কোথাও কারফিউ নেই। জনগণের চলাচলের ওপর থেকেও সকল বিধি-নিষেধ তুলে নেয়া হয়েছে। অবস্থার উন্নতির হওয়ার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে সমগ্র উপত্যকায় ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সংবেদনশীল ও স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপত্তাবাহিনী উপস্থিত থাকবে। যেন লোকজন নির্ভয়ে চলাচল করতে পারেন, নিজেদের নিত্যদিনের কাজ করতে পারেন। প্রিপেইড মোবাইলের আউটগোয়িং কলের ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন। তবে মোবাইল ইন্টারনেট এখনো বন্ধ রয়েছে। কারফিউ প্রত্যাহারের পরও কাশ্মীরের জনজীবন পুরোপুরি স্বাভাবিক ধারায় ফেরেনি। তবে রাস্তায় আগের চেয়ে বেশি যানবাহন দেখা গেছে। শনিবার চলমান উত্তাল আন্দোলনের ৯৯তম দিন। এদিকে, কাশ্মীরের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর জোট হুরিয়ত কনফারেন্স-এর ডাকা হরতাল বহাল থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে আন্দোলনের শততম দিনেও বেশিরভাগ দোকান, অফিস-আদালতই বন্ধ থাকবে। প্রসঙ্গত, ৮ জুলাই অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় সেনা ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর যৌথ অভিযানে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল যোদ্ধা নিহত হন। বুরহান নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে কাশ্মীরজুড়ে উত্তেজনা শুরু হয়। বিক্ষুব্ধ কাশ্মীরিদের দাবি, বুরহানকে ভুয়া এনকাউন্টারে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে পুলওয়ামা ও শ্রীনগরের কিছু অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়। পরবর্তীতে বিক্ষোভ আরো জোরালো হলে পুরো কাশ্মীরজুড়ে কারফিউ সম্প্রসারিত হয়। নারাদা নিউজ, দ্য হিন্দু, ওয়েবসাইট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন