শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ত্রিপুরা দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মসজিদ পুনঃনির্মাণ করা হবে

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ-এর ঘোষণা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

ভারতের বৃহত্তম সামাজিক-ধর্মীয় মুসলিম সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ জানিয়েছে, তারা গত সপ্তাহে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় দাঙ্গাবাজদের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ মেরামত এবং ঘরহারা মুসলমানদের পুনর্বাসন করবে। গত শনিবার এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাকিমুদ্দিন কাসেমির নেতৃত্বে গ্রুপের একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মূল্যায়ন করতে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছে।

গত সপ্তাহে অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অফ সিভিল রাইটস বলেছে যে, রাজ্যের মুসলিম এলাকায় মসজিদ, বাড়ি এবং ব্যক্তিদের ওপর ডানপন্থী জনতা হামলার অন্তত ২৭টি নিশ্চিত ঘটনা ঘটেছে। অধিকার গোষ্ঠীটি বলেছে, প্রায় সব আক্রমণ ডানপন্থী বিশ্ব হিন্দু পরিষদসহ বিভিন্ন ডানপন্থী গোষ্ঠী চালিয়েছে, যেগুলো স্পষ্টতই বাংলাদেশে হিন্দু-বিরোধী সহিংসতার প্রতিবাদে জড়ো হয়েছিল।

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ আরো বলেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে ৩০ কি.মি.দূরে অবস্থিত সিপাহিজলা এলাকায় হিন্দু দাঙ্গাকারীরা ওই অঞ্চলের মুসলমানদের মসজিদগুলোতে হামলা চালিয়েছে। এছাড়া গত কয়েক দিন ধরে মসজিদে ইবাদত করতেও বাধা দিচ্ছে কয়েকটি হিন্দু সংগঠন। সংগঠনটি জানিয়েছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ত্রিপুরা রাজ্যে হিন্দু দাঙ্গাকারীদের দ্বারা যে সব মুসলিম এলাকা ও মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা দেখতে ওই অঞ্চল সফর করেছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের একটি প্রতিনিধি দল।
এদিকে এ সপ্তাহের শুরুতে নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা ‘দ্যা অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রটেকশন অফ সিভিল রাইটস’ সংস্থা বলেছে, তারা এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে যে, ত্রিপুরা রাজ্যে ২৭টির মতো উগ্রবাদী হামলা হয়েছে চরমপন্থী হিন্দুদের মাধ্যমে। ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন মসজিদ, ঘর-বাড়ি ও সাধারণ মুসলিমদের ওপর এসব হামলা হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো চরমপন্থী বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন এসব হামলা চালিয়েছে।

মুসলিম গ্রুপটি বলেছে, তারা এ অঞ্চলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অংশগুলো দেখার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চাইছে। ‘জমিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ মসজিদ মেরামত এবং ভাঙচুর করা বাড়িগুলোর মুসলিমদের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে’।

সিপাহিজালা জেলার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ প্রধান কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী বলেন, পুরো জেলায় গত সপ্তাহে ‘অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের’ হাতে মসজিদ ভাঙচুরের দুটি ঘটনা ঘটেছে। ‘দুটি মসজিদে দুটি ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছে... পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং শুক্রবার স্বাভাবিকভাবে নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে’।
শনিবারের বিবৃতিতে জমিয়তের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানী উল্লেখ করেছেন যে, ‘যারা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অবমাননা করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি’।

যদিও অনেক দল বলেছে যে, মসজিদে হামলা হয়েছে, কিন্তু রাজ্য পুলিশ কোন মসজিদ পুড়িয়ে দেয়ার কথা অস্বীকার করেছে’। শনিবার ওই অঞ্চলের পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (উত্তর রেঞ্জ) লালহমিঙ্গা দারলং বলেছেন, ‘এটি একেবারে নিয়ন্ত্রণে এবং সেখানকার সবকিছু স্বাভাবিক’। তিনি বলেন, ‘খুব ছোট’ ঘটনা এবং জিনিসগুলো ‘বাড়াবাড়ি করা হয়েছে’। শুক্রবার রাজ্যের হাইকোর্ট রাজ্যে রিপোর্ট করা সাম্প্রদায়িক ঘটনার বিষয়ে ১০ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে একটি রিপোর্ট চেয়েছে। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন