উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক পরিচ্ছন্নতাকর্মী অসমর্থিত, অরক্ষিত এবং অবমূল্যায়িত অবস্থায় রয়েছেন। তাদের কাজের ধরনের জন্য অনেকেই তাদের এড়িয়ে যান। ওয়াটারএইডের একটি নতুন বৈশ্বিক প্রতিবেদন বলছে, কোভিড-১৯ মহামারি এই জনগোষ্ঠীর জীবিকার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলেছে, যার ফলে এদের অনেকেই অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করছেন বা কোনো ক্ষতিপূরণ ছাড়াই অতিরিক্ত ঝুঁকি গ্রহণ করছেন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ‘স্যানিটেশন ওয়ার্কারস : দ্য ফরগটেন ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারস ডিউরিং দ্য কোভিড-১৯ প্যান্ডেমিকস’ শিরোনামে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারিতে দেশব্যাপী লকডাউন চলাকালে অনেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিরাপদ পানি, যথাযথ স্যানিটেশন এবং উন্নত স্বাস্থ্যসুবিধা ছাড়াই হাসপাতাল, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার এবং সামাজিক পর্যায়ে ফ্রন্টলাইনে কাজ করে গিয়েছেন। ভাইরাসের হুমকি ছাড়াও পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রমে অনেক রকম বিপদ রয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা ও রোগের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি থাকে এবং তাদের প্রায়ই মনুষ্য-বর্জ্যরে সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শে আসতে হয়।
এ বিষয়ে ওয়াটারএইডের প্রধান নির্বাহী টিম ওয়েনরাইট বলেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ওয়াশ পরিষেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং চলমান ও ভবিষ্যৎ মহামারি থেকে সুরক্ষিত থাকতেও এটি অত্যাবশ্যকীয়। কিন্তু পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ছাড়া এটি চলমান থাকা সম্ভব নয়। সবার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিতের লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিকও বিবেচনায় রেখে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য বিনিয়োগ করা ও তাদের সমর্থন দেয়া প্রয়োজন।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, সমাজে স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীদের পেশার কোনো স্বীকৃতি নেই। তারা সামাজিক অবজ্ঞা ও অর্থনৈতিক দূরবস্থার সম্মুখীন হন। সেই সঙ্গে তারা স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হন। তারাই অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় কাজ করার কারণে সবচেয়ে বেশি অসুস্থতার ঝুঁকিতে থাকেন। তাদের যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা এবং নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার সময় এসেছে। বিশ্ব টয়লেট দিবসে সরকার, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, নিয়োগকর্তা এবং সাধারণ জনগণের প্রতি ওয়াটারএইড মহামারি কালের নীরব যোদ্ধা এই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুরক্ষা, সম্মান, সমর্থন এবং তাদের স্বার্থে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন