শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ব্যাটারি অস্ত্রে বিশ্বজয় চীনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

মোটরগাড়ির ক্ষেত্রে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দ্রুতই বিশ্ববাজার দখল করছে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি। আর এখানেই বাজিমাত করছে চীন। দেশটির তৈরি ব্যাটারিই হয়ে উঠেছে তাদের বিশ্বজয়ের অস্ত্র। এই অস্ত্রেই ঘায়েল করছে ইউরোপ ও আমেরিকাকেও। ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির প্রতিযোগিতায় তাদের ধারেকাছেও কেউ নেই। খনি থেকে ব্যাটারির কাঁচামাল উৎপাদন থেকে শুরু করে গাড়ি প্রস্তুত পর্যন্ত সবকিছুই চীনা কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে। দ্য গার্ডিয়ান। ইলেকট্রিক কার বা বৈদ্যুতিক গাড়ির কথা এলেই সবার আগে আসে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলা। এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি করার রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক কোম্পানিটির হাতেই। কিন্তু ইলনের এই কোম্পানির সফলতার পেছনেও রয়েছে সেই চীনা ব্যাটারির ক্যারিশমা। চীনের সাংহাইতেও টেসলার কারখানা রয়েছে। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার কারখানার চেয়ে এই সাংহাই কারখানাই বেশি গাড়ি তৈরি করে। আর এই গাড়িগুলো যাতে সচল হয় সেই ব্যাটারিগুলোর বেশির ভাগই চীনের তৈরি। মূলত আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবিলা ও কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যেই ডিজেল/পেট্রলচালিত গাড়ি থেকে ইলেকট্রিক গাড়ির দিকে ঝুঁকছে বিশ্ব। বিরাট সম্ভাবনাময় এই খাতের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ হচ্ছে ব্যাটারি। এ ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী ও নিশ্চিত করতে চাইছে কোম্পানিগুলো। ফলে তাদের মধ্যে বিশাল একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। বিশ্বের সমরাস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতার সঙ্গে মিলিয়ে যাকে বলা হচ্ছে ‘ব্যাটারি আর্মস রেস’ তথা ব্যাটারি অস্ত্র প্রতিযোগিতা। এ ক্ষেত্রে ইউরোপ ও আমেরিকাকে হটিয়ে ইতোমধ্যে একচেটিয়া আধিপত্য গড়ে তুলেছে ‘বিশ্বের নির্মাতা’ খ্যাত দেশ চীন। ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ চীন নিজেই বৈদ্যুতিক গাড়ির সবচেয়ে বড় বাজার। গত বছর এখানে ব্যাটারিচালিত গাড়ি বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ; যা বিশ্বের মোট বিক্রির চেয়ে অন্তত ৪০ শতাংশ বেশি। বিশ্বের মোট ব্যাটারি বাজারের ৩০ শতাংশই চীনের ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিএটিএলের দখলে। ব্যাটারি তৈরির প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে কোবাল্ট। বিশ্বের ৮৫ ভাগ কোবাল্টই এখন চীনা কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে। যার উৎস প্রধানত আফ্রিকার দরিদ্র দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো। এখানকার ৭০ শতাংশ খনিই নিয়ন্ত্রণ করছে চীনারা। এই কোম্পানিগুলোর সবই সরকারি আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছে। গত বছরের হিসাব বলছে, কঙ্গোতে থাকা ১৯টি কোবাল্ট খনির ১৫টিই এখন চীনা মালিকানায়। কাগজপত্রে ব্যক্তিগত বা পাবলিক কোম্পানি হিসাবে দেখালেও সেগুলোতে বিনিয়োগের মূলে আছে চীন সরকার। কঙ্গোর চাইনিজ খনি প্রতিষ্ঠানগুলো সম্প তি চীন সরকারের কাছ থেকে ১২শ’ কোটি ডলারের ঋণও পেয়েছে। খনি সামলাচ্ছে এমন বড় পাঁচটি কোম্পানিতেই চীন সরকারের ঋণ আছে প্রায় ১২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। এদের মধ্যে চায়না মলিবডেনাম কোম্পানি (সিএমওসি) নামের প্রতিষ্ঠানটিই ২০১৬ সালে একসঙ্গে দুটো বড় মার্কিন খনি কোম্পানি কিনে নিয়েছিল। যার একটি ছিল বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিবারের মালিকানায়। স্টক এক্সচেঞ্জে তারা নিজেদের খাঁটি পাবলিক কোম্পানি দাবি করলেও তাদের ২৫ শতাংশ বিনিয়োগই চীনের এক প্রাদেশিক সরকারের। চলতি বছরের আগস্টেই কঙ্গোর কোবাল্ট খনিতে ২৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেয় কোম্পানিটি। গার্ডিয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন