শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

কিরকুকে আইএসের পাল্টা হামলা

প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মসুল অভিযানে সম্ভাব্য মানবঢাল ৫৫০ পরিবার : জাতিসংঘ
ইনকিলাব ডেস্ক : ইরাকে মসুল ঘিরে তীব্র লড়াই চলার মধ্যেই উত্তর ইরাকের কিরকুক নগরীতে পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। কিরকুকের বেশ কয়েকটি সরকারি ভবনে হামলা চালিয়ে ছয় পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ২২ জনকে হত্যা করেছে আইএস বিদ্রোহীরা। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলায় ১২ জন আইএস জঙ্গিও নিহত হয়েছে। কিরকুকের একজন মেয়রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, নগরের উত্তরে একটি পাওয়ার প্ল্যান্টে আইএস জেহাদিদের তা-বে ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, “আমার ধারণা, নিহতদের মধ্যে পাওয়ার প্ল্যান্টের ইরানি কর্মীরাও রয়েছে।” ইরানের একটি কোম্পানির মালিকানাধীন ওই পাওয়ার প্ল্যান্টটির নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি বলেও জানান তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা বিবিসিকে বলেন, হামলার কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া, আইএস জঙ্গিদের সড়কে চলাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। আইএস সংশ্লিষ্ট একটি সংবাদ সংস্থার খবরে বলা হয়, তাদের যোদ্ধারা কিরকুকের টাউন হলে ঢুকে পড়েছে এবং সেখানকার বড় একটি হোটেলের দখল নিয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলেছে, হামলার পর নগরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। মসজিদগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা পুলিশ প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সারহাদ কাদির বিবিসিকে বলেন, জঙ্গি এবং একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী কিরকুক পুলিশের তিনটি ভবন এবং একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রধান কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। “পুলিশ এমার্জেন্সি ভবন এবং কিরকুক পুলিশ পরিদপ্তরের পুরাতন ভবনে হামলাকারী সব জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ডুমাজ জেলায় এখনও কয়েকজন জঙ্গি লুকিয়ে আছে।” যদিও কিরকুকের গভর্নর নাজম আল-দ্বীন করিম কুর্দিস সংবাদ সংস্থা রুদাও কে বলেন, কুর্দি পেশমের্গা যোদ্ধা এবং দুর্নীতি দমন বাহিনী সম্পূর্ণরূপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তিনি বলেন, আইএসের ‘স্লিপার সেল’ এ হামলা চালিয়েছে। “ধাইএসের বিরুদ্ধে মসুলে ইরাকি সেনাবাহিনীর অভিযানের জবাব দিতেই তারা এই হামলা চালিয়েছে। তারা এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে যাতে ইরাকি বাহিনী মসুল অভিযান বাতিল করে কিরকুকের দিকে বেশি মনযোগ দেয়। এছাড়া, যেহেতু মসুলে তারা হেরে গেছে, তাই এ ধরনের হামলা চালিয়ে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে চাইছে আইএস।” এদিকে, ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুলে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জেহাদিদের বিভিন্ন স্থাপনা বা আস্তানার কাছাকাছি সাধারণ বেসামরিক মানুষজনকে রাখা হয়েছে। সম্ভাব্য মানবঢাল হিসেবে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন। মসুলের আশপাশের গ্রামগুলো থেকে ৫৫০টি পরিবারকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে বলে শুক্রবার ওই মুখপাত্র জানান। মুখপাত্র রাভিনা শ্যামদাসানি ওই অঞ্চল থেকে পাওয়া তথ্যে বিষয়টি ‘নিশ্চিত’ হওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, মানবাধিকার কার্যালয় থেকে ওই অঞ্চলের একটি গ্রামে ৪০ জন সাধারণ মানুষকে হত্যার যে খবর পাওয়া গেছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। ইরাকি বাহিনী মসুলের কাছাকাছি চলে আসলে আইএস যোদ্ধারা সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বলে ইতিপূর্বে আশঙ্কা করেছিল বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। সম্প্রতি ইরাকের সামরিক বাহিনী দেশটিতে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি মসুলে অভিযান শুরু করেছে। প্রাণ বাঁচাতে সেখানকার বেসামরিক নাগরিকরা দলে দলে পালিয়ে যেতেও শুরু করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত সোমবার ইরাকি বাহিনী মসুল অভিযান শুরুর পরই বেসামরিক নাগরিকেরা সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে নগর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। বর্তমানে মসুলে বসবাসকারী প্রায় ১৫ লাখ মানুষের মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি আইএস যোদ্ধা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও মসুলের বেসামরিক নাগরিকদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এরই মধ্যে যারা মসুল ছেড়ে পালিয়েছে তারা পশ্চিম সীমান্ত বরাবর সিরীয় শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিবিসি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন