সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে তিন গুণ দ্রুত ছবি তুলতে সক্ষম চীনের স্যাটেলাইট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সজ্জিত একটি নতুন চীনা স্যাটেলাইট বর্তমান মার্কিন-ডিজাইনকৃত সংস্করণের চেয়ে তিনগুণ দ্রুত বড় এলাকার উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবি তুলতে পারে। প্রকল্পের সাথে জড়িত বিজ্ঞানীরা একথা বলেছেন।

চীনা পিয়ার-রিভিউ জার্নাল স্পেসক্রাফট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, বেইজিং-৩ একটি সামরিক যান এবং এটি বহন করছে এমন কোনো অস্ত্র শনাক্ত করার জন্য যথেষ্ট তীক্ষ্ন এলাকাগুলোর ছবি তুলতে পারে, যা প্রতি সেকেন্ডে ১০ ডিগ্রি পর্যন্ত অভূতপূর্ব গতিতে ঘোরে।

স্যাটেলাইটের ‘নিবলতা’ এটিকে পূর্বে প্রযুক্তিগতভাবে অসম্ভব বলে বিবেচিত কিছু কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম করেছে, যেমন তিব্বত মালভূমি এবং পূর্ব চীন সাগরের মধ্যবর্তী ৩,৯১৫ মাইল ইয়াংজি নদীকে উত্তর থেকে দক্ষিণে চীনের ওপর দিয়ে মাত্র একটি ট্রিপে ধরা। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে প্রধান বিজ্ঞানী ইয়াং ফাংকে উদ্ধৃত করা হয়েছে।

মি. ইয়াং বলেছেন, ‘চীন চটপটে স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে তুলনামূলকভাবে দেরীতে শুরু করেছিল, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক সাফল্য অর্জন করেছে’। ‘আমাদের প্রযুক্তির স্তর একটি বিশ্ব-নেতৃস্থানীয় অবস্থানে পৌঁছেছে’।
তিনি বেইজিং-৩-কে ওয়ার্ল্ডভিউ-৪-এর চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ দ্রুত বলে বর্ণনা করেছেন। ওয়ার্ল্ডভিউ-৪ একই প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ইউএস লকহিড মার্টিনের তৈরি সবচেয়ে উন্নত পৃথিবী পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের পটভ‚মিতে গবেষণা করা হয়েছে যে, চীন দ্রুত মহাকাশ প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছে। এ মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইউএস স্পেস ফোর্সের মহাকাশ অভিযানের ভাইস চিফ জেনারেল ডেভিড থম্পসন সতর্ক করেছিলেন যে, বেইজিং দশকের শেষের দিকে নেতৃত্ব নিতে পারে।

হার্ভার্ড স্মিথসোনিয়ান সেন্টারের জ্যোতিঃপদার্থবিদ জোনাথন ম্যাকডওয়েল টেলিগ্রাফকে বলেছেন, ‘এ আবিষ্কার এই সত্যকে প্রতিফলিত করে যে, চীনা মহাকাশ প্রযুক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধরে ফেলেছে’।
‘এটি ইঙ্গিত দেয় যে, মার্কিন বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট শিল্প চীনাদের কাছ থেকে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবে। আমরা অনুমান করতে পারি, চীনা সামরিক স্যাটেলাইটগুলো অত্যন্ত ভাল।

‘এখন পর্যন্ত চীনারা মহাকাশে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে, বরং সোভিয়েত মডেলে। পরিমাণে অনেক হয়েছে এবং গুণগত মান অনেক বেশি নয়। আপনি যদি মনে করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি অপ্রতিদ্ব›দ্বী পরাশক্তি হিসাবে সুন্দরভাবে বসে আছে, তবে তা কখনই স্থায়ী হবে না’।

সমীক্ষা অনুসারে, চীনা স্যাটেলাইটটি জুন মাসে সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরের একটি কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ‘একটি গভীর স্ক্যান’ সম্পাদন করে পরীক্ষা করা হয়েছিল। চাইনিজ একাডেমি অফ স্পেস টেকনোলজির অংশ ডিএফএইচ স্যাটেলাইট কোম্পানির জন্য কাজ করা বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, এটি ৪২ সেকেন্ডে মোট ১ হাজার ৪৬৭ বর্গমাইল চিত্র ধারণ করেছে।

ছবিগুলো পিক্সেল প্রতি ১৯.৬ ইঞ্চি, যা ‘রাস্তায় একটি সামরিক যান শনাক্ত করতে এবং এটি কী ধরনের অস্ত্র বহন করতে পারে তা বলতে যথেষ্ট তীক্ষè’ তারা যোগ করেছে।
বাণিজ্যিক উপগ্রহ ওয়ার্ল্ডভিউ-৪ পিক্সেল প্রতি প্রায় ১২ ইঞ্চি ছবি তৈরি করে। যদিও অন্যান্য সামরিক-গ্রেড স্যাটেলাইটগুলো বেইজিং-৩-এর অনুরূপ স্তরের বিশদ ক্যাপচার করতে পারে।

‘আমি মনে করি যে, এই স্যাটেলাইটটিকে এত উত্তেজনাপূর্ণ করে তোলে তা হল এটি কোথায় হতে চলেছে তা বেছে নেওয়ার জন্য এটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে এবং তারপরে এর ট্র্যাকিং এর নমনীয়তা ব্যবহার করছে যাতে এটি আসলে এমন সব জিনিস দেখতে পারে যা সাধারণ উপগ্রহ দেখতে সক্ষম হবে না। দ্রæত সময়, ‘হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ গবেষণা গবেষণাগারের পরিচালক কোয়েন্টিন পার্কার বলেছেন।

স্যাটেলাইট ইমেজিংয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ হল যে, স্যাটেলাইটটি ঘোরার সময় ক্যামেরাটি খুব স্থির থাকতে হবে, কারণ কম্পনগুলো চিত্রগুলোকে অস্পষ্ট করতে পারে। কিন্তু এ পরীক্ষায়, স্যাটেলাইটের নাটকীয় ঘূর্ণন তার ক্যামেরার দৃষ্টিশক্তির কোণকে ভ‚মিতে পরিবর্তন করেছে, এটি একটি পরিষ্কার চিত্র অর্জন করার সময় পূর্বে পরিচালিত হওয়ার চেয়ে একটি বড় এলাকা ক্যাপচার করতে দেয়।

গত কয়েক বছরে চীন একটি উচ্চাভিলাষী মহাকাশ কর্মসূচির উন্নয়নে বিলিয়ন বিলিয়ন ঢেলে দিয়েছে। এ বছর, চীন প্রথমবারের মতো নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন চালু করেছে এবং মঙ্গলে একটি রোভার অবতরণ করেছে। বেইজিং ২০৩৬ সালের মধ্যে চাঁদে মহাকাশচারী পাঠাতে চায়। চীন বিভিন্ন হাইপারসনিক বিমানেরও পরীক্ষা করেছে, যেগুলো অস্ত্র বহন করছে কিনা তা সনাক্ত করা এবং প্রতিরোধ করা কঠিন। সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ, ইয়াহু নিউজ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Zabron ২৫ জুলাই, ২০২২, ১২:১৭ এএম says : 0
Well done China.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন