প্রধানমন্ত্রী মোদির সমালোচনাকারী শত শত মুসলিম নারীর ছবি অনলাইনে আপলোড করে তাদের নিলামে তোলার চক্রান্তকারী ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপের নির্মাতা ২১ বছরের নীরজ বিষ্ণোইকে আসামের জোড়হাট থেকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। তাকে জেরা করতে গিয়ে অবাক পুলিশ। দেখা গিয়েছে, নিজের কৃত কর্মের জন্য তার কোনও রকম অনুশোচনা তো নেই-ই, বরং সে মনে করে সে যা করেছে তা একদম ঠিক কাজ।
আসামের ডিব্রুগড়ের বাসিন্দা নীরজ বি টেক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সে ভোপালের ভেলোর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ছাত্র। বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেপ্তার করার পর ওইদিনই আদালতে তোলা হয়। তাকে ৭ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নীরজকে জেরা করে এবং ইন্টারনেটে তার পুরনো সব মন্তব্যকে বিশ্লেষণ করে পুলিশ বুঝতে পেরেছে ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণেই সে সম্পূর্ণ দিগভ্রষ্ট হয়েছে। প্রশ্নোত্তর ওয়েবসাইট ‘কোরা’-তে বিভিন্ন সময়ে সে যে ধরনের কথা বলেছে তাতে ধর্মান্ধতার দিকটিই প্রকট হচ্ছে। তাকে এমন খোঁচাও মারতে দেখা গিয়েছে যে, হিন্দু ধর্মেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা বলে, যেটা অন্য ধর্ম বলে না।
মিশনারিগুলিকে আক্রমণ করে সে দাবি করেছেন, মিশনারিগুলি অনেক সময় দুস্থ মানুষকে সাহায্য করে বটে। কিন্তু তার বিনিময়ে সেই মানুষদের থেকে অনেক ফায়দাও নেয়। এমনকী, সেই লোকগুলিকে গোমাংস খাইয়ে দেয়, যাতে তারা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করতে না পারে। অন্যান্য ধর্মকে কটাক্ষ করে হিন্দু ধর্মের জয়গান গাওয়ার পাশাপাশি এমনকী সানি লিওনিকে নিয়েও মন্তব্য করেছে নীরজ। তার মতে, সানির বেড়ে ওঠার সময় পারিবারিক পরিবেশ খারাপ থাকায় তার বড় হয়ে ওঠাতেই সমস্যা ছিল। আর সেই কারণেই শেষ পর্যন্ত তাকে পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকতে হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, ভগবদগীতা পড়তে খুব ভালবাসে সে। সে মনে করে গীতা পড়তে গেলে হিন্দু হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। প্রত্যেক মানুষেরই উচিত গীতাপাঠ করা। তবে সে মুখে এই ধরনের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত ঘৃণ্য চক্রান্তে জড়িয়ে পড়ে। তার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই তাকে ধরিয়ে দিয়েছে। টুইটারে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট বানিয়ে সে মুম্বাই পুলিশকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল, এখনও পর্যন্ত এই অ্যাপ কাণ্ডে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা নিরপরাধ। সে-ই এই অ্যাপের পিছনে থাকা আসল মাথা। তবে সে হয়তো ভাবতে পারেনি, একদিনের মধ্যেই পুলিশের জালে ফাঁসতে হবে তাকেও। সূত্র: টাইমস নাউ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন