ইনকিলাব ডেস্ক : উরি হামলার পর পাকিস্তান ও ভারত উভয় দেশের পক্ষ থেকেই সীমান্তে বেসামরিক লোক হত্যার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরে পরিচালিত হামলার ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে। এ অবস্থায় পরমাণু শক্তিসম্পন্ন দুটি দেশ তাদের সীমান্ত এলাকা এবং কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলকায় সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনায় সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি বেসামরিক লোকজন হত্যার অভিযোগ তুলে পরস্পর দোষারোপ করে যাচ্ছে। গত শুক্রবার পাকিস্তানভুক্ত আজাদ কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় ভারতীয় সেনাদের শেল বর্ষণে এক তরুণীসহ তিনজন প্রাণ হারায়। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের এই অভিযোগ তোলার পরপরই ভরতের পক্ষ থেকে অনুরূপ অভিযোগ তুলে বলা হয়, পাকিস্তানি সেনাদের শেল হামলায় ভারতে দুই বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। এর পর ভরতের সূত্রের দাবি, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা লাইন অব কন্ট্রোলের কাছে অস্ত্রধারীদের হামলায় এক ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে একজন হামলাকারী নিহত হন। হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার আগে ওই সেনার দেহ বিচ্ছিন্ন করে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী ওই ঘটনার পাল্টা জবাব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘটনার যথাযথ জবাব দেয়া হবে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, পাল্টা হামলায় একজন হামলাকারীও নিহত হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, লাইন অব কন্ট্রোলের কাছে সন্ধ্যায় অতর্কিত হামলায় এক সেনা এবং হামলাকারীদের একজন নিহত হয়েছে। হামলাকারীরা পাকিস্তানভুক্ত আজাদ কাশ্মীরে ফিরে যাওয়ার আগে ওই সেনার দেহ বিচ্ছিন্ন করে গেছে। এর আগে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর সীমান্তে ভারতীয় হামলায় ১৫ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএসএফ। তাদের দাবি, জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে চালানো গুলিতে ১৫ পাকিস্তানি সেনা নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ভারতীয় সেনা হত্যার এই ঘটনা ঘটেছে। এর এক সপ্তাহ আগে আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের গুলিতে সাত পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছিল বলে দাবি করে বিএসএফ। যদিও এসব অভিযোগই অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিএসএফ ডিজির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বিএসএফকে পাকিস্তানের গুলিবর্ষণের সমুচিত জবাব দিতে বলেছেন। তবে কোনওভাবেই যাতে প্রথমে গুলি চালাতে বারণ করেছেন। এদিকে নিয়ন্ত্রণ রেখায় চলতি গুলিবর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে বিএসএফ ডিজি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে অবহিত করেছেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরিতে হামলার পর পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ঢুকে ‘সার্জিক্যাল’ হামলা চালানোর দাবি করে ভারত। এরপর সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখায় ধারাবাহিকভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গুলিবিনিময় করছে ভারত ও পাকিস্তান। যার ফলে নিয়মিত উভয়ে দেশের সেনারা নিহত হচ্ছেন। রয়টার্স, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, দি হিন্দু।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন