শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

৩৬ বছর পর উদ্ধারকারীর সন্ধান পেলেন ভিয়েতনামের এক নারী

প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ১৯৮০ সালে পরিবারসহ ভিয়েতনাম থেকে পালিয়েছিলেন ইয়েন সিয়াও। সমুদ্রে ছোট একটা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় সবার সাথে মরতে বসেছিলেন তিনি। একটি জাহাজ তখন তাদের সবাইকে উদ্ধার করেছিলো। সেদিন তার জীবন বাঁচিয়েছেন এমন একজনকে ৩৬ বছর পরে খুঁজে পেয়েছেন ইয়েন সিয়াও। ১৯৮০ সালের অক্টোবর মাস। ইয়েন সিয়াও এর বয়স তখন চার বছর। ভিয়েতনামে যুদ্ধ শেষ হয়েছে কয়েক বছর হলো। মার্কিন সেনাদের হারের পর দক্ষিণ ভিয়েতনামের পতন হলো উত্তর ভিয়েতনামের সেনাদের কাছে। সেসময় প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছিলেন দক্ষিণ ভিয়েতনামের অনেকেই, যার মধ্যে ছিলো ইয়েন সিয়াও ও তার পরিবার। সমুদ্র পথে পাড়ি জমানোর পর মৃত্যুর মুখে পড়েছিলো ছোট একটা নৌকায় গাদাগাদি করে থাকা ৮২ জন মানুষ। পথ হারিয়ে সমুদ্রে পাঁচদিন ধরে ভাসছিলো নৌকাটি। তখন দেখা মেলে একটি জাহাজের।
‘যখন আমি আমার জীবনের পিছনে ফিরে তাকাতে চাইলাম তখন দেখলাম একটা জায়গায় শুন্যতা রয়ে গেছে। আমার জীবনের প্রথম পাঁচ বছর হারিয়ে গিয়েছিলো। আমার বাবা মা যুদ্ধের সময়টা এবং কেন আমরা পালিয়েছিলাম সেটা নিয়ে একেবারেই কথা বলতেন না। আমি চেয়েছিলাম আমার জীবনের হারিয়ে যাওয়া সেই সময়টুকু খুঁজে বের করতে’। ফেসবুকে একটি আহ্বান জানিয়েছিলেন ইয়েন সিয়াও। যে জাহাজ তার জীবন বাঁচিয়েছিলেন তার একটা ছবি পোস্ট করেছিলেন। জাহাজটির নাম ছিলো বার্জ টাস্টা। নরওয়ের মালিকানাধীন একটি তেলের ট্যাঙ্কার। দীর্ঘ ৩৬ বছরে জাহাজটির কোম্পানি বদলে গেছে। কিন্তু ফেসবুকে অসংখ্য শেয়ারের বদৌলতে খুঁজে পাওয়া গেলো বার্নার্ড ওয়েগেনকে। সেদিন ইয়েন সিয়াওকে উদ্ধার করা বার্জ টাস্টার ক্রুদের একজন তিনি। ইয়েন বলছিলেন, বার্জ টাস্টা জাহাজটি সেদিন থেমেছিলো বলেই মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে গিয়েছিলো অনেকগুলো মানুষ। ‘সেদিন ঐ জাহাজটি যদি আমাদের উদ্ধার না করতো আমরা নির্ঘাত মারা যেতাম। জাহাজে পানি ও খাবার ফুরিয়ে গিয়েছিলো। যমদূত এসে আমাদের দরজায় কড়া নাড়বে আমরা বোধহয় সেই অপেক্ষায় ছিলাম’- বলেন ইয়েন সিয়াও। বার্নার্ড ওয়েগেনের এখন অনেক বয়স হয়েছে। মাথার চুল হারিয়েছেন। চোখে রয়েছে চশমা। ইয়েন সিয়াও এখন সিঙ্গাপুরে বসবাস করছেন। তবে ৩৬ বছর পরে এসে সেদিনকার সেই চার বছরের মেয়েটি অবশেষে ধন্যবাদ জানানোর সুযোগ পেলেন অন্তত একজন উদ্ধারকারীকে। সূত্র : বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন