ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও ন্যাটোর দ্বন্দ্ব যত ঘনীভূত হচ্ছে তত উদ্বেগ বাড়ছে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ নিয়েও। ইউরোপের জ্বালানি নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন ন্যাটো প্রধানও। ইউরোপ প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করে রাশিয়ার কাছ থেকে আমদানি করে। মূলত, দুইটি পাইপলাইনের মাধ্যমে এই গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া। ইয়ামাল-ইউরোপ লাইনটি বেলারুশ, পোল্যান্ড হয়ে পৌঁছে গেছে জার্মানিতে। নর্ড স্ট্রিম ওয়ান বাল্টিক সাগর হয়ে সরাসরি এসেছে জার্মানিতে। গত কয়েক বছর ধরে জোটের বিভিন্ন দেশ তাদের গ্যাসের উৎস বহুমুখী করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। তবে এখনও রাশিয়ার উপর নির্ভরশীলতা পুরোপুরি হ্রাস করা যায়নি। বর্তমানে ইউরোপের গ্যাসের চাহিদার ৩৫ শতাংশ বা এক তৃতীয়াংশ মিটিয়ে থাকে রাশিয়া। এমন অবস্থায় ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের দ্বন্দ্বে জ্বালানি সংকটে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে ইইউ। বিষয়টিকে খাটো করে দেখছেন না ন্যাটো প্রধানও। সামরিক এই জোটের মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘‘আমরা ইউরোপের জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কেননা একটি দেশের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরতা ঝুঁকিপূর্ণ। যে কারণে আমরা ন্যাটো মিত্ররা সরবরাহ বহুমুখী করার বিষয়ে কাজ করতে ও মনযোগী হতে একমত হয়েছি।’’ এরইমধ্যে রাশিয়া থেকে সরবরাহ করা গ্যাসের বিকল্প হিসাবে কাতার থেকে গ্যাস আনা যায় কিনা, সে ব্যাপারে দেশটির সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই উদ্বেগ নতুন করে তৈরি হয়েছে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশ ঘটানোর খবরে। ওয়াশিংটন দাবি করে আসছে দেশটিতে হামলা চালাতে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার সেনা ও যুদ্ধ সরঞ্জাম জড়ো করেছে রাশিয়া। তবে এমন আশঙ্কা সত্য নয় বলে বারবারই উল্লেখ করে আসছে মস্কো। গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে জার্মানি-রাশিয়ার মধ্যে নর্ড স্ট্রিম টু পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর মধ্য দিয়ে বাল্টিক হয়ে সরাসরি রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে। তবে এখনও এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর চূড়ান্ত অনুমোদন মিলেনি। তবে এর কার্যক্রম পরিচালনা ও অনুমোদন নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। এই আইনি প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে জার্মানিতে একটি সংস্থাকে নিয়োগ দিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম। তবে সংস্থাটির প্রধান ইয়খেন হোমান স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এফএজেডকে জানিয়েছে, আপাতত সামনের পদক্ষেপগুলো বন্ধ আছে। বিষয়টি বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে সমাধা হওয়ার আশা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। এমন কি ইউক্রেনে কোন সংকট তৈরি হলে বিকল্প পথে ইউরোপে জ্বালানি আসার বিষয়টিও অনিশ্চিতায় পড়বে। গত বছরের ডিসেম্বরে ন্যাটো দেশগুলোর কাছে কিছু দাবি তুলে ধরে রাশিয়া। ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ দেয়া হবে না, যুক্তরাষ্ট্রসহ জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে এমন নিশ্চয়তা চায় তারা। যা এরইমধ্যে নাকচ করে দিয়ে বাইডেন প্রশাসন। রোববার রুশ পররাষ্টমন্ত্রী সের্গেই লেভরভ ন্যাটোর কাছে এই বিষয়ে নতুন করে জবাব চাইবেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘যদি তারা এটা (দাবি পূরণ) করতে না চায় তাহলে তাদের উচিত কেন সেটাও ব্যাখ্যা করা। রয়টার্স, ডিপিএ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন