চীনা মহাকাশ সংস্থা স্পেস ট্রান্সপোর্টেশন জানিয়েছে যে, তারা বিমান ও ডানাযুক্ত রকেটের একটি সংমিশ্রণ তৈরি করছে যা শেষ পর্যন্ত মহাকাশ পর্যটনের জন্য ব্যবহার করা হবে। স্পেস ডটকমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানটিকে একটি সুপারসনিক বিজনেস জেট হিসেবেও ব্যবহার করা হবে যা পৃথিবীর যেকোনো দুটি পয়েন্টকে সংযুক্ত করতে পারে।
সংস্থাটি বলেছে যে, এর মাধ্যমে বেইজিং থেকে নিউইয়র্কের ফ্লাইটে মাত্র এক ঘন্টা সময় লাগবে। বর্তমানে এই পথ অতিক্রম করতে সাধারণ বিমানে ১৮ থেকে ২৩ ঘন্টা সময় লাগে। স্পেস ট্রান্সপোর্টেশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সিজিআই ভিডিওতে দেখা যায় যে, যাত্রীরা একটি প্লেনে চড়ছেন যা দুটি রকেট বুস্টার সহ একটি গ্লাইডার উইংয়ের সাথে সংযুক্ত। বিমানটি উড্ডয়নের পর ডানা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং উপকূলীয় স্থান দিয়ে উড়ে যায়। উইং এবং বুস্টারগুলি তারপর লঞ্চ প্যাডে ফিরে আসে, যখন বিমানটি তার গন্তব্যে চলে যায়, উল্লম্বভাবে অবতরণ করে।
একজন মুখপাত্র চীনা মিডিয়াকে বলেছেন যে, ডানাযুক্ত রকেটটির ‘স্যাটেলাইট বহনকারী রকেটের তুলনায় কম অপারেশনাল খরচ হবে এবং একটি বর্তমান বিমানের চেয়ে দ্রুত গতির হবে।’ স্পেসএক্স ২০১৭ সালে ‘আর্থ টু আর্থ’ নামে একটি অনুরূপ প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। আর্থ টু আর্থ স্টারশিপ রকেট ব্যবহার করে শহর থেকে শহরে যাত্রী পরিবহন হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছিল। তারপর থেকে সংস্থাটি এই প্রকল্প সম্পর্কে কোনও বিশদ প্রকাশ করেনি।
ভার্জিন গ্যালাকটিক গত গ্রীষ্মে সিইও স্যার রিচার্ড ব্র্যানসনকে ১১-মিনিটের সাবঅরবিটাল ফ্লাইটে পাঠিয়েছিল। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাকাশ-পর্যটন শিল্পকে সাধারণ মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। সংস্থাটির একজন এক্সিকিউটিভ বলেছেন যে, মহাকাশ পর্যটন তাদের সংস্থার প্রাথমিক ফোকাস হবে। তবে তিনি এমন একটি সময়ের পূর্বাভাসও দিয়েছেন, যখন ফিক্সড-উইং বিমান একটি সুপারসনিক কমিউটার হিসাবে কাজ করবে। স্পেস ট্রান্সপোর্টেশন বলেছে যে, গত আগস্টে এটি সংস্থটি সুপারসনিক স্পেস প্লেনের জন্য ৪ কোটি ৬৩ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছে। প্লেনটি ঘন্টায় প্রায় ২ হাজার ৬০০ মাইল অতিক্রম করবে বলে দাবি করেছে তারা। সংস্থাটি আরও বলেছে যে, তারা সম্প্রতি তিয়ানজিন ১ এবং তিয়ানজিন ২ নামেন রকেটগুলোতে সফল পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। তবে এই পরীক্ষার বিষয়ে তারা বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেনি।
স্পেস ট্রান্সপোর্টেশন ২০২৪ সালে তার প্রথম পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনা করার আগে ২০২৩ সালের মধ্যে স্থল পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। এই উন্নয়ন যদি পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে যায় তবে ২০২৫ সালে তারা যাত্রী নিয়ে একটি পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনা করবে। সূত্র : রব রিপোর্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন