বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লাইফস্টাইল

শীতের সবজি অনেক উপকারী

| প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:১৪ এএম

শীতকাল চলছে। বাজারে সবজির পসরা। মনকাড়া সতেজ সব সবজি। যদিও দামটা এখনো একটু বেশি। শীতের সবজি পুষ্টিগুনে ভরপুর। শরীরের সুরক্ষায় দরকারী। তাই পরিমিত পরিমান শাক সবজি খান। যারা এগুলো একটু বেশী খান তারা অনেক ভালো থাকেন, সতেজ থাকেন। শরীরের প্রয়োজনীয় যত ভিটামিন ও মিনারেলস্ প্রায় সবই সবজিতে আছে। তাই শীতের সবজি খেয়ে শরীরটা ফিট রাখা সম্ভব।

ফুলকপি: শীতকালীন অন্যতম জনপ্রিয় সবজি। ফুলকপিতে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, মিনারেল, আ্যন্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইটোকেমিক্যাল ইত্যাদি রয়েছে। পানি থাকে ৮৫ পারসেন্ট। ফুলকপিতে ফাইবার আছে। যা খাবার হজমে সহায়তা করে। ফুলকপির সালফোরাফেন উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ইন্ডোল ৩ কর্বোনোল একটি অ্যান্টিইনফ্লামেটারি উপাদান, যা ইনফ্লমেটরি রিঅ্যাকশন প্রতিরোধ করে। ফলে পাকস্থলীর প্রাচীরের সুরক্ষায় কাজ হয়। একটি মাঝারী আকারের ফুলকপিতে আছে, শক্তি ২৫ কিলোক্যালরী, কার্বোহাইড্রেট ৪.৯৭ গ্্রাম, প্রোটিন ১.৯২ গ্রাম, ফ্যাট ০.২৮, আঁশ ২ গ্রাম, ফোলেট .৫৭ মাইক্সোগ্রাম, থায়ামিন ০.০৫ মাইক্রোগ্রাম। ফুলকপিতে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, যা মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্বি করে।

বাধাকপি: বাধাকপিতে অনেক পুষ্টি থাকে। ১০০ গ্রাম বাধাকপিতে আছে খাদ্যশক্তি ২৫ কিলোক্যালরী, শর্করা ৫.৮ গ্রাম, চিনি ৩.২ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ২.৫ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, আমিষ ১.২৮ গ্রাম, থায়ামিন ০.৬৬৬১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন কে ৭৬ আইইউ, ক্যালসিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম ইত্যাদি। বাধাকপিতে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ফসফরাস-যা হাড়কে মজবুত করে। বাধাকপি রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্বি করে। গবেষনায় দেখা গেছে নিয়মিত যারা বাধা কপি খান, তাদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বেশি। বাধাকপিতে প্রচুর খাদ্যআঁশ আছে। যা হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে। এআরএস এর মতে, লাল বাধাকপিতে ৩৬ রকমের ফ্ল্যাভোনয়েড এবং অ্যানথ্রোসায়ামিন আছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে। এই সবজির ভিটামিন সি, সালফার বিষাক্ত ইঊরিক এসিড দুর করে। বাধাকপি সবজি, সালাদ, স্যুপ করে খাওয়া যায়।

শিম: ১০০ গ্রাম শিমে ৮৬ দশমিক ১ গ্রাম জলীয় অংশ, খাদ্যশক্তি ৪৮ কিলোক্যালরী,৩.৮ গ্রাম প্রোটিন,৬.৭ গ্রাম শর্করা, ২১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আছে। শিমের বিচিতে প্রচুর পরিমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি আছে যা হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। বাতের ব্যথা কমাতে সহায়ক শিম। চুলের সুরক্ষায়ও শিম ভুমিকা রাখে। শিমের আশ কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে। এই সবজি ক্যান্সার, জন্মগত ক্রুটি প্রতিরোধে সহায়তা করে। কোলন অ্যাডনোমার বিপরীতে কাজ করে থাকে। যাতে কোলন ক্যান্সার রোধ হতে পারে।

গাজর: গাজর আঁশযুক্ত পুষ্টিগুনে ভরা সবজি। সালাদ, রান্না, মিক্স সবজিতে দিয়ে খাওয়া যায়। গাজরের হালুয়া জনপ্রিয়। গাজরের ইংরেজী নাম ক্যারট। গ্রিক শব্দ ক্যারট অন থেকে এই শব্দের উৎপত্তি। ক্যান্সার প্রতিরোধে গাজর কাজ করে। গবেষনায় দেখা গেছে- ফুসফুসের ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, ক্ষুদ্রান্তে, কোলন ক্যান্সার রোধ করে গাজর। গাজরের বিটা কেরোটিন, লিউটিন কোলেষ্টেরেল কমায়। দাতের ক্ষয়ে যে সব ব্যাকটেরিয়া আছে। গাজর তাদের বিরুদ্বে কাজ করে। গাজর লিভারের টক্সিন জাতীয় উপাদানও পরিস্কার করে। লিভারের চর্বি কমাতে ভুমিকা রাখে। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনায় দেখা গেছে-যারা ৭ দিনে ৬টির বেশি গাজর খান তাদের স্ট্রেকে আক্রান্ত হবার ঝুকি কম। গাজর মধুর সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বক উজ্জল হয়। মরা কোষ দুর হয়।

লেটুসপাতা: এটি খুব উপকারী সবজি। এই সবজি আশ যুক্ত বিধায় হজমে সহায়তা করে। আয়রন গর্ভবতীদের জন্য খুব প্রয়োজন। লেটুসে প্রচুর আয়রন রয়েছে। প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি, পটাসিয়াম আছে লেটুস পাতায়। লেটুস পাতার সোডিয়াম, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩ শরীরের অঙ্গে পানি জমে যাওয়া রোধ করে। ভিটামিন এ আছেপ্রচুর, যা বিপাক প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। চোখের জন্য অনেক উপকারী। রক্তের সুস্থতার জন্য পটাসিয়াম প্রয়োজন। লেটুস পাতায় যথেষ্ট পরিমান পাটাশিয়াম পাওয়া যায়। ১০০ গ্রাম লেটুস পাতায় ১৫ ক্যালরী, ২৮ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১৯৪ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ২.৯ গ্রাম কর্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এ, বি, সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম আছে।

যে খাবারে প্রোটিনের পরিমান বেশি থাকে, সে খাবারে ফরমালিন কাজ করে। শাক সবজিতে প্রোটিন নামেমাত্র, তাই ফরমালিন দিলেও তা খুব একটা কাজ করবে না। ফরমালিন বাদে অন্য সব কেমিক্যাল দিয়ে সবজির পচন রোধ করা হতে পারে। কীটনাশক দেয়ার সাথে সাথে সবজি বিক্রি করা ঠিক না। কৃষকরা কখনও কখনও সাথে সাথে সবজি বিক্রি করেন। এ জন্য সবজি ভিনেগার, লবন দেয়া পানিতে কিছুক্ষন ভিজিয়ে রাখা ভাল। কীটনাশকের প্রভাব দুর হয়।

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
মুনালয়, দক্ষিন নাজিরপুর, ডাক ও থানা-বানারীপাড়া।
মোবাইল: ০১৭১৫৩৬৪২৮০

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন