ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের। গত সোমবারের এই আলাপে দুই নেতা রুশ-মার্কিন সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ওপর জোর দিয়েছেন বলে ক্রেমলিনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। ফোনালাপে পুতিন নির্বাচনী এজেন্ডা বাস্তবায়নে ট্রাম্পের সাফল্য কামনা করেন। অন্যদিকে ভোটের প্রচারের সময় পুতিনের নেতৃত্বের প্রশংসা করা ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে নিজের দেশের একটি স্থিতিশীল সম্পর্ক তিনি দেখতে চান। ক্রেমলিন বলছে, ট্রাম্প ও পুতিনের আলোচনায় সিরিয়া প্রসঙ্গও এসেছে। দুই নেতাই একমত হয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার বর্তমান সম্পর্ক মোটেই সন্তোষজনক নয়। আগামী বছর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক যে ২১০ বছর পূর্ণ করছে, সে বিষয়টি নিয়েও কথা হয়েছে ট্রাম্প পুতিনের মধ্যে। একটি বাস্তববাদী ও পরস্পরের জন্য লাভজনক সহযোগিতামূলক সম্পর্কে গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন দুই নেতাই।
পুতিন ও ট্রাম্প নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখতে এবং পরে সুবিধাজনক সময়ে সশরীরে সাক্ষাতের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন বলে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে ফোনটা কে করেছিল, ক্রেমলিন তা স্পষ্ট করেনি। ট্রাম্পের অফিস জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্টের দিক থেকেই ফোন এসেছিল। দুই দেশের সামনে ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ এবং কৌশলগত অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে তাদের কথা হয়েছে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বলেছেন, রাশিয়া ও রাশিয়ার জনগণের সঙ্গে একটি মজবুত ও স্থিতিশীল সম্পর্ক গড়ে তুলতে মুখিয়ে আছেন তিনি। ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে রাশিয়ার সুর বদলাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মস্কোয় বিবিসির সাংবাদিক স্টিভ রোজেনবার্গ বলেন, রাশিয়ার মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টকে একজন বাস্তববাদী এবং বেপরোয়া ব্যবসায়ী বলে মনে করে, যার সঙ্গে রাশিয়া ব্যবসা করতে পারে। আট বছর আগে বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় দীর্ঘদিনের বৈরীতা ভুলে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের কথা বললেও গত কয়েক বছরে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উত্তর কোরিয়া ও ইরানের বিষয়ে ওয়াশিংটন আর মস্কোর সুর ঠিক থাকলেও সিরিয়ার ক্ষেত্রে প্রকাশ্যেই বিবাদে জড়িয়েছে দুই দেশ। ইউক্রেইনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপেরও সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার গোপন কর্মকা-ের তথ্য ফাঁস করে দেশান্তরী হওয়া এডওয়ার্ড স্নোডেনকে রাশিয়া আশ্রয় দেয়ার পরও ওয়াশিংটনের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
এদিকে, বিবিসিকে উদ্ধৃত করে এএফপি জানায়, খবরে বলা হয়, ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সমালোচনা করে নেতা হিসেবে তাঁকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রেখেছিলেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, নেতা হিসেবে ওবামার চেয়ে অনেক অনেকগুণ এগিয়ে পুতিন। ওই সময় পুতিনও ট্রাম্পকে অসাধারণ ব্যক্তি ও সন্দেহাতীত মেধাবী মানুষ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। মার্কিন নির্বাচনের ফল প্রকাশ হওয়ার পর পর রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনগুলোতে ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলা হয়, জনগণের নেতার জয় হয়েছে। কয়েক বছর ধরে বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে ওবামার যুক্তরাষ্ট্র আর পুতিনের রাশিয়া। যার সর্বশেষ প্রকাশ ঘটেছে সিরিয়ায়। মস্কো সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আর ওয়াশিংটন সমর্থন দিচ্ছে বাশারবিদ্রোহীদের। তবে মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর ওয়াশিংটন-মস্কো সম্পর্ক উন্নয়নের আভাস মিলছে। এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন