শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে তার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিতে রাজি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এক আইনপ্রণেতা। গতকাল তিনি জানান, লঙ্কান আর্থিক সংকট নিরসনে অন্তর্র্বতী সরকার গঠনের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। সিনিয়র আইনপ্রণেতা মৈত্রিপালা সিরিসেনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের পর জানান, গোটাবায়া রাজাপাকসে সম্মত হয়েছেন যে পার্লামেন্টের সব দলকে নিয়ে নতুন প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভা গঠনে একটি জাতীয় কাউন্সিল নিয়োগ দেওয়া হবে।
গোটাবায়া রাজাপাকসের আগে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ছিলেন মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। সরকার দলীয় এই আইনপ্রণেতা এই মাসের শুরুতে আরও ৪০ জন আইনপ্রণেতাকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতাসীন জোট ছেড়ে বেরিয়ে যান। তবে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের মুখপাত্র রোহান ওয়েলিউইটা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কোনও যোগাযোগ করেননি। আর এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলে সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।
শ্রীলঙ্কা প্রায় দেউলিয়া হওয়ার পথে। সম্প্রতি দেশটি ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার আলোচনার আগে তারা আর কোনও বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না। এই বছর দেশটিকে সাতশ’ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে হবে আর ২০২৬ সাল নাগাদ করতে হবে দুই হাজার পাঁচশ’ কোটি ডলার। শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমে এসেছে একশ’ কোটি ডলারের নিচে।
বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের কারণে মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে পড়েছে আমদানি। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার, জ্বালানি, রান্নার গ্যাস এবং ওষুধ কিনতে মানুষকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। ২০ বছর ধরে শ্রীলঙ্কান জনগণের প্রায় প্রতিটি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করেছেন প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে এবং তার পরিবার। গত মার্চ থেকে শ্রীলঙ্কার রাজপথে বিক্ষোভ চলছে। তাদের দাবি, রাজাপাকসে পরিবার এই সংকটের জন্য দায়ী। তাদের রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার দাবি তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। সূত্র : এপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন