গত মঙ্গলবার দুপুরে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল করাচি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। আর তারপরই ছড়িয়ে পড়েছিল একটি ভিডিও। তাতে দেখা গিয়েছিল, এক মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গি রিমোটের বোতাম টিপতেই কীভাবে ভয়াবহ বিস্ফোরণে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে সাদা এসইউভি গাড়ি।
তবে তার ঠিক আগে একঝলক দেখা গিয়েছিল শারি বালোচ নামের জঙ্গিটির নির্লিপ্ত মুখ। আত্মঘাতী জঙ্গি মানেই পুরুষ, সাধারণ ভাবে এটাই প্রচলিত ধারণা। কিন্তু সেই ধারণাকে আরও একবার চূর্ণ করে প্রথম বালোচ মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গি হিসেবে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটাল শারি। যদিও এটা ব্যতিক্রম নয়। বিভিন্ন সময়ে মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গিদের নাম উঠে এসেছে নানা ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায়। রইল সারা দুনিয়ায় শিহরন ফেলে দেয়া কয়েকটি জঙ্গি হামলার কথা, যেখানে মহিলা ফিদায়েঁরাই ছিল সন্ত্রাসের প্রধান অস্ত্র।
ভারতের মানুষের মনে আজও দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে গিয়েছে ১৯৯১ সালের মে মাসে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যা। তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমবুদুরের সেই ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় বেশ কয়েকজন জঙ্গি সেদিন হাজির ছিল ঘটনাস্থলে। কিন্তু যার শরীরে বাঁধা বিস্ফোরকে প্রাণ হারিয়েছিলেন রাজীব, সে ধানো। আসল নাম থেনমোঝি রাজারত্নম ওরফে গায়ত্রী। এলটিটিই জঙ্গি ধানো রাজীবকে প্রণাম করতে যেতেই গোপনে টিপে দিয়েছিল আরডিএক্স লাগানো বেল্ট। সেই ভয়ংকর বিস্ফোরণে সব মিলিয়ে ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন বহু মানুষ।
নাইজেরিয়ার বোকো হারাম জঙ্গি গোষ্ঠী সাধারণত মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গি নিয়োগ করে। ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ সেদেশের মলাই-উমারারি মসজিদে যে বিস্ফোরণ হয় তা ঘটিয়েছিল দুই মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গি। এর আগে ২০১৫ সালে এক মাছবাজারে একই ভাবে মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গিদের ঘটানো বিস্ফোরণে মুহূর্তে প্রাণ হারান ২০ জন মানুষ। এরকম উদাহরণ অনেক রয়েছে। বারবার বোকো হারাম মহিলা জঙ্গিদের ব্যবহার করে নানা ভয়াবহ হামলা ঘটিয়েছে।
২০০৫ সালের ৯ নভেম্বর। ইরাকে এক মার্কিন কনভয়ে হামলা চালায় মুরিয়েল ডাগাকিউ নামের এক মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গি। বেলজিয়ামের এই তরুণীকেই বলা হয় ইউরোপের প্রথম আত্মঘাতী জঙ্গি। পুজি কুসওয়াতি। ইন্দোনেশিয়ার প্রথম আত্মঘাতী জঙ্গি। ২০১৮ সালের মে মাসে একটি চার্চে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিজের সঙ্গে নিজের নাবালিকা মেয়েদেরও সে উড়িয়ে দেয়! মনে করা হয় সে আইসিসের সঙ্গে যুক্ত। সূত্র: টাইমস নাউ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন