চীনের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে দাঁড়াবে নিরাপদ ও নিম্ন কার্বন সৃষ্টিকারী খাত। অর্থনীতিবিদ ও শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং কার্বন হ্রাসে নেয়া পদক্ষেপ অর্থনৈতিক উন্নয়নকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে এমন ধারণা ভুল। তারা মনে করছেন, নিরাপদ ও নিম্ন কার্বন জ্বালানিতে বিনিয়োগে চীনের উন্নয়নের চাকা স্থবির হয়ে পড়বে এমন উদ্বেগ যৌক্তিক নয়। তবে কয়লার বিকল্প নতুন এবং ক্লিন এনার্জির উন্নয়নের জন্য ধৈর্য ধরা প্রয়োজন। চীনের নিউজ সার্ভিস ও এনার্জি ফাউন্ডেশন চায়নার (ইএফসি) যৌথ ফোরামে তারা এসব কথা বলেন। ইএফসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রেসিডেন্ট জৌ জি বলেছেন, চীন প্রযুক্তি ও জ্বালানি বিজ্ঞান প্রভাবক শিল্প বিপ্লবকে গভীরভাবে গ্রহণ করেছে, যা নির্ধারণ করে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি নিরাপত্তা, পরিবেশগত সুরক্ষা এবং জলবায়ু স্থিতিশীলতার বিভিন্ন নীতির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জন বিষয়ে জাতিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এ নীতির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ভালোভাবে সমন্বিত হতে পারে এবং মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্যগুলোর সমন্বয়ও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। জৌ জির মতে, যেহেতু চীন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয় এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে অগ্রগতি অনুসরণ করে, তাই বায়ু ও সৌরবিদ্যুতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরো ত্বরান্বিত করবে। ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৪তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদকালে (২০২১-২৫) ডিজিটাল আপগ্রেডিং, প্রচলিত শিল্পকে সবুজ শিল্পে রূপান্তর, সবুজ এবং কম কার্বন-সংশ্লিষ্ট নগরায়ণ ও আধুনিক নগর বিনির্মাণে মোট বিনিয়োগ ৪৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান বা ৬ দশমিক ৮৭ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। ইএফসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রেসিডেন্ট জৌ জি উল্লেখ করেন, ১৪তম পঞ্চবার্ষিকীতে প্রতি বছর ঘরে প্রায় ৮ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগ হবে। তিনি বলেন, এটা গুরুত্বপূর্ণ যে এ খাতে মোট বিনিয়োগ দিন দিন বাড়ছে। ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের হিসাবে, ২০২১ সালে চীনের স্থায়ী সম্পদ বিনিয়োগ ছিল প্রায় ৫৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিরপেক্ষ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে চীনা বিনিয়োগ ১৪০ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে দাঁড়াবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের জন্য যথেষ্ট বিনিয়োগের সুযোগ করে দেবে শক্তির রূপান্তর। এজন্য স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে বহুমুখী কাজ এবং চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে। কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনে জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দেন সিকুইয়া ইনস্টিটিউট ফর কার্বন নিউট্রালিটির চেয়ারম্যান লি জুনফেং। তিনি বলেন, ১৪তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বাড়তি জ্বালানি উৎপাদনের ক্ষেত্রে জীবাশ্ম জ্বালানি নয় এমন উৎসকে একমাত্র উৎস হিসেবে বিবেচনা করা যুক্তিযুক্ত। ইএফসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন