বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনকালে গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে হামলার ঘটনায় এস আই বিশ্বজিৎ কুমার বসু বাদী হয়ে ৯২ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৮০০জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কটুক্তি এবং পরোক্ষভাবে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকেলে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে কোন প্রকার উস্কানি ছাড়াই পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা ন্যাক্কারজনক ভাবে হামলা করে। সম্পূর্ন অন্যায়ভাবে সংগঠিত নজীরবিহীন এ হামলায় বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার ও আহত হয়েছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন (৫৫), নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়িকা সৈয়দা রেহেনা ঈসা সহ ৩০জন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের পুরুষ নেতাকর্মী এবং ১১জন মহিলা নেতাকর্মী সহ মোট ৪১জনকে পুলিশ এ সময় বিনা কারণে দলীয় কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করে। ৪১ জন নারী কর্মীর মধ্যে ৩০ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি ১১ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা (৬৫), সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এবং খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল (৫৫), জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান (৫৩), নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তারিকুল ইসলাম জহির (৫৫), নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মাসুদ পারভেজ বাবু (৩৫), নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আজিজুল হাসান দুলু (৫৭), জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পি (৫৪), নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ (৪৫), নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শেখ সাদী (৩৮), নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কাজী মাহামুদ আলী (৫৫), নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক স ম আবদুর রহমান (৫৫), সহ খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক সহ ৯২জন নেতৃবৃন্দকে পুলিশ অযৌক্তিক ভাবে এ মামলায় আসামী করেছে।এছাড়া অজ্ঞাত আরো ৭০০-৮০০ জনকে আসামী
করা হয়েছে।
এদিকে গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় খুলনা নগর ও জেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের অর্ধ শতাধিকেরও বেশি নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন বলে দলীয় সূত্র থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
অপরদিকে আজ সকাল ১০টায় কেডি ঘোষ রোডস্থ নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা অভিযোগ করেছেন, গতকাল ছাত্রলীগ ও যুবলীগ পুলিশের সহায়তায় আমাদের সমাবেশের ওপর বিনা কারণে আক্রমণ চালায়। পুলিশ টিয়ারসেল ও গুলি করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তিনি আজ শুক্রবার (২৭ মে) সকালে দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে আগেরদিন হামলা, ভাংচুর ও সমাবেশ পন্ড হওয়া নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, সরকার শেষ মুহুর্তে এসে অসহিষ্ণু আচরণ করছে। দেশের ১৭কোটি জনতার সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, সাবেক তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে যারা কটুক্তি করে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে তারাই একদিন ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। নিশিরাতের সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর যতই অত্যাচার করুক না কেন তারা তাদের পতন এবার ঠেকাতে পারবে না। তিনি বলেন, আমরা কেএমপি দফতর থেকে অনুমতি নিয়েই সমাবেশ শুরু করি। অথচ সম্পূর্ণ বিনা কারণে এবং কোন প্রকার উস্কানি ছাড়াই আমাদের সমাবেশে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের চিহ্নিত ক্যাডাররা হামলা চালায়। তারা আমাদের ওপর বিভিন্ন ভাবে দমননীতি চালাচ্ছে। এমনকি এ ঘটনায় যারা আহত হয়েছে তাদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে আটক করা হচ্ছে। গতকালের ঘটনায় ৫০০ চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে। অর্ধ শতাধিকেরও বেশি নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। আমাদের ওপর হামলা করে আমাদের নামেই মামলা করেছে পুলিশ। আদালত খুললে তারা আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক তারিকুল ইসলাম জহির ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পীসহ নেতৃবৃন্দ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন