করোনা বিপর্যয়ের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রতিষ্ঠান বিপুল পরিমাণ মুনাফা করেছে। আবার লোকসানে পড়া প্রতিষ্ঠানও নানা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে। সব মিলিয়ে তুমুল ভোক্তা চাহিদা, রেকর্ড নিম্ন সুদহার ও ফেডারেল সরকারের প্রণোদনায় দেশটির প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফায় উল্লম্ফন দেখা দেয়। একই সঙ্গে বেড়েছে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) বেতনও। ২০২১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৫০০ বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের সিইওদের বেতন ১৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বেতন বাড়ার এ হার গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। যেখানে বেসরকারি খাতের কর্মীদের বেতন বাড়ার হার ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। খবর এপি। তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইকুইলারের বিশ্লেষণ অনুসারে, এসঅ্যান্ডপি-৫০০ কোম্পানি পরিচালনা করা প্রধান নির্বাহীদের আর্থিক সুবিধা প্যাকেজ গত বছর ১৭ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। গড়ে তাদের আর্থিক সুবিধার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলারে। যেখানে এ সময়ে বেসরকারি খাতের কর্মীদের বেতন বাড়ার হার মাত্র ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এ হারও ২০০১ সালের রেকর্ডের পর সর্বোচ্চ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বড় প্রতিষ্ঠানই মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মীদের বেতন বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। গত বছরের শেষ দিকে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। ২০২০ সালে কভিড-১৯ মহামারীতে মার্কিন অর্থনীতি সংকোচনের মুখোমুখি হয়। সে সময় বিনিয়োগকারীদের চাপে সিইওদের আর্থিক সুবিধাদি কাটছাঁট করাও হয়েছিল। তবে অর্থনৈতিক সংকোচনের মতো পরিস্থিতিতেও অনেক প্রতিষ্ঠান বিপুল পরিমাণ লাভের মুখ দেখে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারদর। উল্লম্ফন দেখা দেয় সংস্থাগুলোর মুনাফায়। এ কার্যক্ষমতার কৃতিত্বস্বরূপ বাড়ানো হয় সিইওদের আর্থিক সুবিধাও। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আবার সিইওদের বড় অংকের আর্থিক সুবিধা দিয়েছে। যেমন গত বছর এক্সপিডিয়া গ্রুপের প্রধান নির্বাহী পিটার এম কার্ন ২৯ কোটি ৬২ লাখ ডলারের আর্থিক সুবিধাদি পেয়েছেন। তিনিই সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত সিইও ছিলেন। এর পরে সর্বোচ্চ বেতন পেয়েছেন মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগান চেজের প্রধান নির্বাহী জেমি ডিমন। গত বছর তিনি ৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলার বেতন পেয়েছেন। এদিকে প্রধান নির্বাহীদের বেতনে বড় ধরনের উল্লম্ফনের কারণে তত্ত্বাবধানে থাকা কর্মীদের সঙ্গে তাদের বেতনের ব্যবধান আরো প্রসারিত হয়েছে। গত বছর সিইওরা যে বেতন পেয়েছেন, তা প্রতিষ্ঠানের বেতন স্কেলের মাঝখানে থাকা কর্মীর আয় করতে কমপক্ষে ১৮৬ বছর সময় লাগবে, যা ২০২০ সালে ছিল ১৬৬ বছর। ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, সংস্থাটির মধ্যম পর্যায়ে থাকা কর্মী গত বছর ২৫ হাজার ৩৩৫ ডলার আর্থিক সুবিধাদি পেয়েছেন। অর্থাৎ সংস্থাটির অর্ধেক কর্মী এর চেয়ে বেশি এবং বাকি অর্ধেক কর্মী এর চেয়ে কম আয় করেছেন। এ বেতনের পরিমাণ গত বছর ২০ হাজার ৯৪২ থেকে ২১ শতাংশ বেশি। গত কয়েক বছর সিইওদের বেতন বৃদ্ধি মন্থর ছিল। তাদের ২০১৭ সালে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০১৯ সালে ৪ দশমিক ১ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ৫ শতাংশ বেতন বেড়েছিল। এপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন