কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উত্তর কোরিয়ার সফলতার দাবিতে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। স্বাধীনভাবে তথ্য না মেলায় দেশটিতে কোভিড পরিস্থিতি ‘ভালো নয়, বরং দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে’ বলে অনুমান তাদের। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দুই সপ্তাহ আগে উত্তর কোরিয়ায় জ্বরে আক্রান্ত মানুষের দৈনিক সংখ্যা তিন লাখ ৯০ হাজার ছাড়িয়ে গেলেও সম্প্রতি দেশটিতে কোভিডের ঢেউয়ের দাপট কমেছে বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট কতজনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে পিয়ংইয়ং তা সরাসরি জানায়নি। দেশটির সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে প্রকাশিত রোগী সংখ্যাও প্রকৃত সংখ্যার তুলনায় কম বলে বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ পোষণ করে আসছেন। সঠিক তথ্যের অভাবে সেখানে পরিস্থিতির তীব্রতা কেমন তা যাচাই করে দেখাও কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভালো নয়, পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে বলেই অনুমান করছি আমরা, বুধবার এক ভিডিও ব্রিফিংয়ে এমনটাই বলেছেন ডব্লিউএইচও’র জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল রায়ান। তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংখ্যার বাইরে কোনো তথ্যই পাচ্ছেন না তারা। রায়ান বলেছেন, আসল তথ্য ও সেখানকার প্রকৃত পরিস্থিতি জানার ক্ষেত্রে সত্যিকারের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদেরকে। পরিস্থিতির তুলনামূলক ভালো চিত্র পেতে ডবিউএইচও দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের মতো উত্তর কোরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একাধিকবার উত্তর কোরিয়াকে টিকা ও সরঞ্জামসহ মেডিকেল সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানায়, কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে লকডাউনের মধ্যে আরাে ৯৬ হাজার ৬১০ জনের শরীরে জ্বরের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে নতুন কারো মৃত্যু হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি তারা।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন প্রদেশ জীবাণু নির্মূলের পদক্ষেপ, ওষুধ ও সরঞ্জামের উৎপাদন বাড়ানো, কিছু কিছু ক্ষেত্রে লকডাউন ও উপকূলে অবরোধ আরোপসহ মহামারীবিরোধী অভিযান ‘জোরদার করেছে’ বলে জানিয়েছে কেসিএনএ। এসবের পাশাপাশি কৃষিকাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও চলছে, বলেছে তারা। কেসিএনএনর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওষুধ খাতকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়াসহ ‘নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর’ লক্ষ্য অর্জনে জোর প্রচেষ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কিম তক হুন দুটি ওষুধ নির্মাণ কারখানা পরিদর্শন করেছেন। তিনি ওষুধের পর্যাপ্ত উৎপাদন ও সরবরাহের ওপর জোর দিয়েছেন, বলেছে এ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। সূত্র : রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন