২০২১ সাল- পুরো বছরজুড়েই ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হামলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কংগ্রেসের কাছে পাঠানো ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা শীর্ষক রিপোর্টে এ কথা বলেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২১ সাল জুড়ে ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তাদেরকে অবমাননা করা হয়েছে। ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। ২রা জুন, বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফগি বটম প্রধান কার্যালয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। রিপোর্টে আলাদা আলাদাভাবে প্রতিটি দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা ইস্যু তুলে ধরা হয়েছে। তবে এর আগের রিপোর্টগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। তারা বলেছে, একটি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকদের সাংবিধানিক সুরক্ষার বিষয়ে কথা বলার অধিকার তাদের নেই। এবার ভারত অধ্যায়ে ধর্মীয় স্বাধীনতার ইস্যু তুলে ধরা হলেও তাতে কোনো রকম মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ভারতীয় মিডিয়া এবং সরকারি রিপোর্টের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রাতিষ্ঠানিক অভিযোগ। বলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে হামলা হলেও সরকারি কর্মকর্তারা তদন্তের রিপোর্ট সম্পর্কে বেশির ভাগ সময় থেকেছে নীরব। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সারা বছরেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড, অবমাননা এবং ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু জবাই অথবা গরুর মাংসের ব্যবসা করার জন্য অহিন্দুদের বিরুদ্ধে ‘কাউ ভিজিল্যান্টিজম’ চালানো হয়েছে। এতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভগতের বিবৃতি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ভারতীয় হিন্দু এবং মুসলিমদের ডিএনএ একই। সুতরাং ধর্মের ভিত্তিতে তাদেরকে আলাদা করা যাবে না। জুলাইয়ে তিনি প্রকাশ্যে এ কথা বলেন। আরও বলেন, দেশে হিন্দু বা মুসলিম কারো কোনো আধিপত্য কখনো থাকতে পারে না। আধিপত্য থাকতে পারে শুধু ভারতীয়দের। তিনি আরও বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের ভীত হওয়া উচিত নয় যে, ভারতে বিপদে ইসলাম। তিনি আরও বলেন, অহিন্দু এমন ব্যক্তিদের গরু জবাই করার জন্য হত্যা করা পুরোপুরি হিন্দুত্ববাদের বিরোধী কর্মকাণ্ড। রিপোর্টে আরও বলা হয়, ১২ই সেপ্টেম্বর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথ প্রকাশ্যে বলেছেন, আগের উত্তর প্রদেশ সরকার সুযোগ সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে মুসলিমদের অগ্রাধিকার দিয়েছে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিন্দু বা হিন্দুত্ববাদ নিয়ে আক্রমণাত্মক পোস্ট দেয়ার অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে অহিন্দু- এমন ব্যক্তিদের। ২০২০ সালে ফরেন কন্ট্রিবিউশন্স রেগুলেশন অ্যাক্টের সংশোধনী পাস হওয়া নিয়ে ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো এর সমালোচনা করেছে। বলা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে নাগরিক সমাজকে এনজিওর অর্থায়ন কমিয়ে দিচ্ছে। সিএনএন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন