মহানবী (সা:)-কে নিয়ে বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ চাইলেন অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। তিনি বলেছেন, ‘মোদি কিছু করুন, বিদ্বেষের বিষ ছড়ানো বন্ধ করুন’। এনডিটিভি-তে এক সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেতা বলেছেন, ‘যারা বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কিছু করা দরকার। এই বিষ যাতে না ছড়ায়, তার জন্য তাকে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
নূপুর শর্মার প্রসঙ্গে নাসিরুদ্দিনের বক্তব্য, ‘তিনি মোটেই ফ্রিঞ্জ এলিমেন্ট বা খুচরো এলেবেলে নেতা নন। তিনি বিজেপি-র জাতীয় মুখপাত্র। বলিউড অভিনেতা মনে করেন, নূপুর যে ক্ষমা চেয়েছেন তা আন্তরিক নয়। তার কথায় মানুষের মনে যে ধাক্কা লেগেছে, তা প্রশমিত হবে না’। নাসিরুদ্দিন শাহের বক্তব্য, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব, তিনি মানুষের মনে সুদ্বুদ্ধি ঢোকাবার চেষ্টা করুন। হরিদ্বারের ধর্মসংসদ নিয়ে তার যা মনে হয়েছে, তিনি বলুন। যদি তিনি ওই কথা সমর্থন করেন, সেটা বলুন, না করলেও বলুন।’
জর্জ অরওয়েলের ১৯৮৪ উদ্ধৃত করে তিনি বলেছেন, ‘তুমি শান্তি ও ঐক্যের কথা বলো, তোমায় একবছর জেলে যেতে হবে। তুমি গণহত্যার কথা বলো, তোমায় হাতে একটা থাপ্পড় মারা হবে। এখানে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড চলছে।’
নূপুর শর্মাকে হত্যার হুমকি দেয়া প্রসঙ্গে নাসিরুদ্দিন বলেছেন, ‘এই হুমকি অবশ্যই নিন্দনীয়। তিনি বলেছেন, এসব কথা ভাবাটাই অন্যায়। এজন্যই পাকিস্তান ও আফগানিস্তান আজ এ পরিস্থিতিতে পড়েছে। আমরা ওদের অনুকরণ করতে চাই না। কিন্তু কোনোভাবে আমরা সেটাই করছি। গো-হত্যা করার সন্দেহে মানুষ মারা হচ্ছে। এসব ঘটনা তো অন্য দেশে ঘটতো, ভারতে নয়।’
ঘৃণা ছড়ানোর জন্য টিভি চ্যানেলগুলোকেও নাসিরুদ্দিন একহাত নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ঘৃণা তৈরি করা হচ্ছে এবং যখনই বিরুদ্ধ মতের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তখন শিরায় সেই বিষ ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। এর জন্য টিভি নিউজ ও সামাজিক মাধ্যম দায়ী।’
নাসিরুদ্দিনই প্রথম বলিউড অভিনেতা যিনি এই বিতর্কে সোচ্চার হলেন। বলিউডের খান-রাও কি সোচ্চার হতে পারতেন না? এ প্রশ্নের জবাবে নাসিরুদ্দিন বলেছেন, ‘তারা যে জায়গায় আছেন, আমি সেই জায়গায় নেই। তবে আমি মনে করি, তারা আজ যে জায়গায় আছেন, তাতে তাদের খুব বেশি কিছু হারাবার নেই। আমার মনে হয়, ওরা মনে করেন, খুব বেশি ঝুঁকি নেয়া হয়ে যাবে।’ নাসিরুদ্দিন শাহরুখের ছেলের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন। তিনি বলেছেন, শাহরুখ যে মর্যাদার সঙ্গে পুরো বিষয়টি সামলেছেন, তা প্রশংসার যোগ্য। নাসিরুদ্দিনের মতে, ‘শাহরুখের অপরাধ ছিল, তিনি তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করেছিলেন। কেউ কোনো বিবৃতি দিলেই জবাব পাচ্ছেন। হয়তো এরপর আমার পালা, আমি জানি না।’ সূত্র : এনডিটিভি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন