তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান গ্রিসের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি তাদের অবস্থানকে ‘ভণ্ডামি’ উল্লেখ করে বলেছেন যে, তারা নিরস্ত্রীকৃত দ্বীপগুলোর নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে এজিয়ানে উত্তেজনার মধ্যে তুরস্কবিরোধী বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোববার তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় ভেন প্রদেশে যুব সমাবেশে বক্তৃতাকালে এরদোগান আরো বলেন, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস একটি মিটিংয়ের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সেটি না করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। এথেন্স যে দাবি করেছিল তার সমালোচনা করে এরদোগান বলেন, মার্কিন ঘাঁটিগুলো রাশিয়ার হুমকি মোকাবেলার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু যখন এটি ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করেছিল তখন মস্কোকে থামাতে কিছুই করেনি। এর আগে গ্রিক কর্মকর্তাদের বিবৃতি এবং পদক্ষেপগুলো এড়াতে সতর্ক করেছিলেন এরদোগান। বলেছিলেন, এর জন্য তাদের অনুতপ্ত হতে হবে। তুরস্ক দাবি করে আসছে যে, গ্রিস পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপগুলোকে নিরস্ত্রীকরণ করুক। বিশ শতকের চুক্তিগুলো উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এই দ্বীপগুলির সার্বভৌমত্ব গ্রিসের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু এই দাবিকে পুরো অমূলক বলছে গ্রিক সরকার। উল্টো তুরস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। বলছে, ন্যাটের সহযোগী এ সদস্য দেশটি ওই দ্বীপ এলাকায় শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। ১৯১৩ সালে লন্ডনে চুক্তি করার সময় থেকে পূর্ব এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জের সামরিকীকরণ সীমিত করা হয়েছিল এবং ১৯২৩ সালে লুসান চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে তাদের নিরস্ত্রীকরণের অবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছিল। লুসান চুক্তিটি করা হয়েছিল, গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থের সমন্বয়ে এজিয়ানে দুই দেশের মধ্যে একটি রাজনৈতিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য। ১৯৪৭ সালের করা প্যারিস চুক্তি, যা ডোডেকানিজ দ্বীপপুঞ্জ ইতালি থেকে গ্রিসের কাছে হস্তান্তর করেছিল, তাদের নিরস্ত্রীকরণও নিশ্চিত করেছিল। যাই হোক, গ্রিস এ নিয়ে যুক্তি দেয় যে, এই ক্ষেত্রে ১৯৩৬ সালের মন্ট্রেক্স কনভেনশন তুর্কি প্রণালীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা উচিত। কিন্তু আঙ্কারার জবাব হলো, মন্ট্রেক্স কনভেনশনের অধীনে দ্বীপগুলোকে নিরস্ত্রীকরণ করার জন্য বাধ্য গ্রিস। এই ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয়ের ওপর জোর দেয়া হয় যে, এতে কোনো বিধান নেই যার মাধ্যমে এটিকে লুসান চুক্তি থেকে আলাদা করা যায়। এদিকে, এরদোগান আরো বলেছেন যে, তিনি শস্য রফতারি করিডোরের জন্য নেয়া পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলোনস্কি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সাথে আলোচনা করতে পারেন। ডেইলি সাবাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন