যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল বাতিলের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখনকার ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে অবৈধভাবে চাপ দিয়েছিলেন। আর এটি ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার সময় পেন্সকে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ফেলেছিলো, এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের একটি প্যানেল। কংগ্রেসের আইন-প্রণেতারা ক্যাপিটল হিলের সেই দাঙ্গার ঘটনা নিয়ে শুনানির সময় পেন্সের একজন সহকারীর বক্তব্য শুনছিলেন। সেখানে তিনি বর্ণনা করেছেন যে কীভাবে জো বাইডেনের বিজয় নস্যাৎ করে দেয়ার চেষ্টা করছিলো হোয়াইট হাউজ। কমিটি চেয়ারম্যান বেনি থম্পসন বলেছেন, ট্রাম্পের কাছে পেন্স নতি স্বীকার না করার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র আসলে ট্রাম্পের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে। কংগ্রেসের এই কমিটি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগ তুলেছে। ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ওই হামলা চালিয়েছিলো ট্রাম্প সমর্থকরা। তখন কংগ্রেস সদস্যরা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয়কে আনুষ্ঠানিক করার প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছিলেন। ট্রাম্প কংগ্রেস কমিটির এই শুনানিকে ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ আখ্যায়িত করে তিরস্কার করেছেন। তার দাবি, নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচন থেকে আমেরিকান জনগণের দৃষ্টি সরাতেই এসব করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস কমিটিতে তৃতীয় দফার শুনানি হয়েছে। সেখানে মূলত প্রেসিডেন্টের নির্বাচিত হওয়ার সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার ওপর দৃষ্টি দেয়া হয়েছিলো। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যেই তখন বলেছিলেন যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল কংগ্রেসে অনুমোদনের যে প্রক্রিয়া সেটি স্থগিত করার ক্ষমতা ভাইস প্রেসিডেন্টের আছে। যদিও আইন বিশেষজ্ঞরা তার এ দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। পেন্সের তখনকার আইনজীবী গ্রেগ জ্যাকব কমিটির সামনে এসে বলেছেন যে ‘তাদের পর্যালোচনা ও কমন সেন্সই’ পেন্সকে নিশ্চিত করতে সহায়তা করেছিলো যে নির্বাচনের ফল উল্টে দেয়ার কোন ক্ষমতা তার নেই। মাইকেল লুটিগ একজন সাবেক জজ ও মি. পেন্সের অনানুষ্ঠানিক সহকারী। তিনি বলেছেন, পেন্স যদিও ট্রাম্পের কথা শুনতেন, তাহলে সেটি আমেরিকাকে চরম সাংবিধানিক সংকটে পড়তে হতো। বৃহস্পতিবারের শুনানির সময় একটি ফুটেজ দেখানো হয় যেখানে ক্যাপিটল হিলে পেন্সের ফাঁসি চেয়ে শ্লোগান দেয়া হয়েছে। আর এটি হয়েছে ট্রাম্পের এক বক্তৃতার পর যেখানে তিনি পেন্সকে ‘সঠিক কাজ’ করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কমিটির সদস্যরা বলেছেন যে ওই সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার টুইট করে পেন্সের সাহসিকতা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। আর তিনি এমন সময় এটা করেছেন যখন ক্যাপিটল হিলে ভাংচুর চালাচ্ছিলো। বেনি থম্পসন বলছেন, “ পেন্স চাপ প্রতিরোধ করেছিলেন, কারণ তিনি জানতেন যে এটা অবৈধ। তিনি জানতেন যে এটা ভুল। তার এই সাহসিকতা তাকে মারাত্মক বিপদে ফেলেছিলো।” যখন ভবনে তাণ্ডব চলছিলো তখন ভেতরেই কাজ করছিলেন মি. পেন্স। সিক্রেট সার্ভিসের লোকজন কীভাবে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে সরিয়ে নেয় সেসব ছবিও দেখানো হয় শুনানির সময়। বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন