ভারতে ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের অধীনে নতুন পদ্ধতিতে সেনাবাহিনীতে লোক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ এখনো অব্যাহত রয়েছে বিহার, তেলেঙ্গানাসহ ১৩টি রাজ্যে। সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি বিহার ও উত্তরপ্রদেশের। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু বিহারেই বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডবে রেলের ক্ষতি হয়েছে ২০০ কোটি রুপির সম্পত্তি। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্প ঘোষণার পর থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিহার রাজ্যে। বক্সার, নওয়াদা, ছপরা, বেগুসরাই, আরা, মুঙ্গের, জেহানাবাদের মতো এলাকাজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। রেলের পাশাপাশি অবরোধ করা হয় জাতীয় সড়কও। টায়ার জ্বালানো, পাথর ছোড়া, গাড়ি ও ট্রেন ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটে। বৃহস্পতিবার ছপরায় একটি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। দানাপুর রেল ডিভিশনের ডিআরএম প্রভাত কুমার জানিয়েছেন, ট্রেনের ৫০টি কামরা ও পাঁচটি ইঞ্জিন পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়েছে। স্টেশন চত্বর ও অফিসে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। সব মিলিয়ে শুধু বিহারেই রেলের ক্ষতি হয়েছে ২০০ কোটি রুপির সম্পত্তি। শনিবার সকালেও বিহারের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ হয়। রেল, সড়কপথ অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। দানাপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিনব ধীমান জানিয়েছেন, যারা এই ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িত ছিলেন, তাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮০ জন চিহ্নিত করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, পাটনা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে তারেগ্না রেলস্টেশনে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকটি মোটরবাইকও জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। জেহানাবাদ থেকে ১২ জন বিক্ষোভকারীকে শনিবার গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। মুঙ্গেরের তারাপুর সুলতানগঞ্জে বিক্ষোভকারীরা বিডিওর গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিক্ষোভের জেরে সরকার নিয়োগে বয়স সীমা করেছে ২১ থেকে ২৩ বছর। সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয় যে ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের নারী-পুরুষেরা চার বছরের জন্য সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীতে চাকরি পাবেন। তাদের মূলত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ সময় তাদের প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার রুপি বেতন এবং ৪ বছর পর ১১ থেকে ১২ লাখ রুপি এককালীন অর্থ দেওয়া হবে। কিন্তু ২৫ শতাংশের বেশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণের চাকরি স্থায়ী করা হবে না। সরকারের এ ঘোষণা আসার পর প্রকল্পের বিরোধিতা করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। এবিপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন