বিশ্বজুড়ে যত ধরনের বাদাম পাওয়া যায়, সেই প্রজাতিগুলোর মধ্যে ম্যাসেডেমিয়া বাদাম সবচেয়ে মূল্যবান। বিশ্ববাজারে প্রায় ৭০ শতাংশ ম্যাসেডেমিয়া বাদাম উৎপাদন হয় একটি গাছ থেকেই। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। শুনতে অবাক লাগলেও এটিই সত্যি। ২০১৮ সালে ম্যাসেডেমিয়া বাদামের ওপর গবেষণা করা হয়। শুধু অস্ট্রেলিয়ায় নয়, হাওয়াইয়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও বাদাম সংগ্রহ করা হয়। বাদামগুলোর ডিএনএ নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে জানা যায়, তাদের ডিএনএ গঠনে অদ্ভুত রকমের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া গেছে। ‘প্ল্যান্ট সায়েন্স’-এর এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় কুইন্সল্যান্ড এলাকার জিম্পি নামে একটি ছোট শহরে ১৯ শতকের পুরনো ম্যাসেডেমিয়া গাছ রয়েছে। সেই গাছ থেকে যে বাদাম পাওয়া যায়, তার ডিএনএ গঠনের সঙ্গেই সাদৃশ্য রয়েছে ম্যাসেডেমিয়া বাদামের। কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত¡বিদ্ ক্রেইগ হার্ডনারের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৯৬ সালে রবার্ট জর্ডন নামে এক ব্যক্তি কুইন্সল্যান্ড থেকে এই গাছের বীজ হনুলুলুতে নিয়ে যান। তার ভাইয়ের বাড়ির পেছন দিকে যে বাগান রয়েছে, সেখানে বীজগুলো পোঁতা হয়েছিল। কিন্তু সেই বীজ থেকে মাত্র ছটি গাছ বেড়ে ওঠে। কুইন্সল্যান্ডের গাছ এভাবেই হাওয়াই অঞ্চলে পৌঁছায়। গবেষকরা জানিয়েছেন, এই গাছের বীজ থেকেই অধিকাংশ বাদাম উৎপাদন করা হয়। তাই উৎপাদনের মূল উৎস হিসেবে এই গাছটিকেই ধরা হয়। এ জন্য এটি ‘ম্যাসেডেমিয়া গাছের চেঙ্গিজ খাঁ’ নামেও প্রসিদ্ধ। জানা যায়, কুইন্সল্যান্ডের রাজধানী ব্রিসবেনে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেনে ১৮৫৮ সাল থেকে প্রথম ম্যাসেডেমিয়া বাদামের চাষ শুরু হয়। তার ঠিক দুই বছর পর এই বাদামের কেনাবেচা শুরু করেন কিং জ্যাকি। লোগান নদীর তীরে যে সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল, তার রাজা ছিলেন তিনি। শুধু পুষ্টিগত উপাদানে ভরপুর থাকার জন্য নয়, ম্যাসেডেমিয়া বাদামের দাম বেশি হওয়ার পেছনে কারণ ভিন্ন। ম্যাসেডেমিয়া গাছ বেড়ে ওঠার জন্য চাই উপযুক্ত পরিবেশ— প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি, প্রয়োজনীয় উপাদান সমৃদ্ধ মাটি ও উষ্ণ আবহাওয়া। এ ধরনের আবহাওয়ার মধ্যে প্রায় সাত থেকে ১০ বছর সময়কালের ব্যবধানে গাছ বেড়ে উঠতে থাকে। কিন্তু সব এলাকার পরিবেশ ম্যাসেডেমিয়া গাছ বেড়ে ওঠার পক্ষে উপযোগী নয়। প্ল্যান্ট সায়েন্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন