টানা প্রায় চার মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। আর মস্কোর এই অভিযানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একজোট হয়েছে ইউরোপীয় অনেক দেশ। পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে রাশিয়াও। অবন্ধুসুলভ দেশগুলোর তালিকা করে জ্বালানিকে হাতিয়ার করেছে দেশটি। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার আশঙ্কায় আবারও কয়লার দিকে ঝুঁকছে জার্মানি। ইউরোপের প্রভাবশালী এই দেশটি ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে কয়লা ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার সীমিত করার বিষয়ে রোববার ঘোষণা দিয়েছেন জার্মানির অর্থনীতি মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ হ্রাসের কারণে সম্ভাব্য ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার সীমিত করবে জার্মানি। আল-জাজিরা বলছে, সম্প্রতি পশ্চিম ইউরোপে পাইপলাইনের মাধমে সরবরাহকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রবাহ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। এরপরই ইউরোপজুড়ে জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে। মূলত এরপরই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে কয়লার ব্যবহার ফের শুরু করার পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। রোববার এক বিবৃতিতে জার্মানির অর্থনীতি মন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক বলেছেন, ‘গ্যাসের ব্যবহার কমানোর জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে কম গ্যাস ব্যবহার করতে হবে। এর পরিবর্তে কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে আরও বেশি করে ব্যবহার করতে হবে।’ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গ্যাস জায়ান্ট গ্যাজপ্রম জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় মেরামত কাজের জন্য নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা বিশ্বাস করেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে রাশিয়া মূলত ইউক্রেনের মিত্রদের শাস্তি দিচ্ছে। মাস কয়েক আগে জার্মানির ক্ষমতায় এসেছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস, গ্রিনস এবং উদারপন্থী এফডিপির ক্ষমতাসীন জোট। তারা জার্মানিতে ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লা ব্যবহার বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে কয়লা ব্যবহারের ঘোষণা দেওয়ায় তা জোট সরকারের নীতির পরিবর্তন বলেই মনে করা হচ্ছে। হ্যাবেক বলেন, ‘এটি (কয়লা ব্যবহারের ঘোষণা) তিক্ত কিন্তু গ্যাসের ব্যবহার কমানোর জন্য অপরিহার্য।’ আল-জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন