গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকারকে বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া আলোচিত রায়ের এক দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে গর্ভপাতের অধিকারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদকারীরা সমবেত হছেন। লস অ্যাঞ্জেলেস, আটলান্টা, ডেট্রয়েট, ওকলাহোমা সিটি, নিউইয়র্ক, জ্যাকসন, ক্যালিফোর্নিয়া ও মিসিসিপিসহ সারা দেশের বিভিন্ন শহরে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ হয়েছে। নিউইয়র্ক শহরে শত শত প্রতিবাদকারী রো মামলাটির রায় পাল্টে দেয়ার বিপক্ষে এবং গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে সেøাগান দেয়। ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্ষোভকারী কয়েক শ’ নারী ‘আমার শরীর, আমার পছন্দ’ ও ‘আদালত বাতিল করুন’ ইত্যাদি সেøাগান দিয়ে সারা শহরে মিছিল করে। একদিকে যেমন নারীরা গর্ভপাতের অধিকার আদায়ের দাবি জানাছেন, অন্যদিকে গর্ভপাত বিরোধীরা এই আইন নিষিদ্ধকরণকে বাস্তবায়ণে নানা পদক্ষেপের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করছে। কঠোর রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির কারণে শনিবার অনেকগুলো গর্ভপাত ক্লিনিক তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। মিসিসিপির প্ল্যানড প্যারেন্টহুড সাউথইস্টের ডিরেক্টর টাইলার হার্ডেন বলেন, তিনি শুক্র ও শনিবার রাজ্যের একমাত্র গর্ভপাত ক্লিনিকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়া লোকদের সাথে কথা বলেছেন। মিসিসিপিতে নারীর জীবন বিপন্নকারী গর্ভধারণ ও ধর্ষণের কারণে হওয়া গর্ভধারণ ছাড়া সব ধরনের গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হবে। মিসিসিপি হাউসের রিপাবলিকান স্পিকার ফিলিপ গান শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি গর্ভপাতের বিরোধিতা করন। গান আরো বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি গর্ভধারণের সময় থেকেই জীবন শুরু হয়।’ ইতোমধ্যে আলাবামা রাজ্যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আটলান্টায় ন্যাশনাল রাইট টু লাইফ কনভেনশনে গর্ভপাত বিরোধী গোষ্ঠীর একজন নেতা শনিবার উপস্থিতদের সতর্ক করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত একইসাথে ‘মহা সম্ভাবনার সময় ও বড় বিপদের সময়’-এর সূচনা করেছে। সংস্থাটির শিক্ষা ও গবেষণার পরিচালক র্যান্ডাল ও ‹ব্যানন, কর্মীদের তাদের বিজয় উদযাপন করতে উৎসাহিত করেছেন। ওকলাহোমা সিটিতে বিক্ষোভকারীদের উপস্থিতি কম ছিল। সেখানে প্রায় ১৫ জন বিক্ষোভকারী ক্যাপিটলের বাইরে সমাবেশ করে। ওকলাহোমা হল ১১টি রাজ্যের মধ্যে একটি, যেখানে গর্ভপাতের পক্ষে কোনো প্রস্তাবকারী নেই। গত মে মাসে এখানে দেশের কঠোরতম গর্ভপাত আইন পাস হয়। অ্যাক্টোপিক গর্ভাবস্থার জন্য দুটি গর্ভপাত করা মেরি অ্যাডামস নামের ৪৫ বছর বয়সী এক নারী বলেন, ‘আমি গত ২৪ ঘণ্টায় যে মানসিক অবস্থার মধ্যে আছি, তা বোঝাতে পারব না... এটা বিরক্তিকর ও অসহ্য। আমি এই মুহূর্তে যা অনুভব করছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন’। তিনি এই বিষয়টিকে ‘নারীর একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন। অ্যাডামস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক জনসংখ্যা তাদের একটি মৌলিক অধিকার হারিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কথা বলতে হবে এবং সর্বশক্তিতে কথা বলতে হবে।’ বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন