বিগত একশ বছরের মধ্যে এই প্রথম বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে রাশিয়া। চলমান ইউক্রেন সংকটের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম এই পরাশক্তির ঋণ খেলাপি হওয়াকে ঐতিহাসিক ঘটনা বলে আখ্যায়িত করছেন বিশ্লেষকেরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯৮ সালের পর রাশিয়া এই প্রথম যে কোনো ধরনের (বৈশ্বিক এবং অভ্যন্তরীণ) ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল রোববারের মধ্যে রাশিয়াকে ১০ কোটি মার্কিন ডলার পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা ছিল। রাশিয়ার কাছে এই অর্থ রয়েছে এবং নিয়ম মেনে দেশটি যথা সময়ে এই অর্থ পরিশোধ করতেও রাজিও ছিল। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের অর্থ পরিশোধ মস্কোর জন্য কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে।
রাশিয়ার অর্থমন্ত্রী এই পরিস্থিতিকে ‘প্রহসন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। রাশিয়ার সরকার বলছে, কৃত্রিমভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। দেশটি জানিয়েছ, ঋণ পরিশোধের জন্য তারা ইউরো ক্লিয়ার ব্যাংকে অর্থ পরিশোধ করেছে। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যাংকটি এই অর্থ পরিশোধ করেনি।
রুশ সরকার জানিয়েছে, তারা সময়মতোই ঋণ পরিশোধ করতে চায় এবং এখন পর্যন্ত তাঁরা এই কাজে সফল। রাশিয়ার প্রায় ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ ঋণ রয়েছে। যা ডলার বা ইউরোতে পরিশোধ করতে হবে। তবে এই পরিমাণের অর্ধেক পরিমাণ অর্থ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাখা আছে।
এর আগে শেষবার ১৯১৮ সালে বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে খেলাপি হয়েছিল রাশিয়া। বলশেভিক বিপ্লবের সময় তৎকালীন নতুন কমিউনিস্ট নেতা ভ্লাদিমির লেনিন রাশিয়ান সাম্রাজ্যের ঋণ পরিশোধ করতে অস্বীকার করেছিলেন। তবে, ১৯৯৮ সালে শেষবার ঋণ খেলাপি হয়েছিল মস্কো। মূলত বরিস ইয়েলৎসিনের শাসনামলের শেষের দিকে বিশৃঙ্খল সময়ে রুবেল সংকটের কারণে খেলাপি হয়েছিল রাশিয়া। সেই সময়ে মস্কো তার অভ্যন্তরীণ বন্ডগুলোতে অর্থ প্রদান করতে ব্যর্থ হলেও রাশিয়ার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ নির্ধারিত সময়েই করেছিল। সূত্র : রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন