যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ায় ন্যাটোর মতো একটি সামরিক জোট বানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে উত্তর কোরিয়া। কিম জং উনের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ওয়াশিংটনের অবিচল লক্ষ্যই পিয়ংইয়ংকে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দাঁড় করাতে বাধ্য করছে বলেও ভাষ্য তাদের। বিবিসি জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়াকে রুখতে প্রয়োজন হলে যুক্তরাষ্ট্র আরও অস্ত্র মোতায়েন করবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়ুন সুক-ইয়লের মধ্যে হওয়া এ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক চুক্তি এবং ৫ বছরের মধ্যে পিয়ংইয়ং প্রথমবার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করতে যাচ্ছে এমন উদ্বেগের মধ্যে কিম প্রশাসনের এ সমালোচনা এলো। “নির্লজ্জভাবে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এশীয় ঘরানার ন্যাটো প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিল,” রোববার নিজেদের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছে উত্তরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সাম্প্রতিক মহড়ার কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে নৌ মহড়াও করেছে, যেখানে ৪ বছরে প্রথমবার কোনো মার্কিন বিমানবাহিনী রণতরীও ছিল। চলতি বছর একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো উত্তর কোরিয়া তাদের আশপাশে যুক্তরাষ্ট্রের এসব মহড়াকে পিয়ংইয়ংয়ের শাসনক্ষমতা পরিবর্তনের লক্ষ্যে যুদ্ধপ্রস্তুতি হিসেবে দেখে আসছে। “যুক্তরাষ্ট্রের ‘কূটনৈতিক যোগাযোগ’ ও ‘শর্তহীন আলোচনার’ কথাগুলো যে ভণ্ডামি এসব মহড়া তা প্রমাণ করছে, একইসঙ্গে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে আমাদের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের আকাক্সক্ষা যে যুক্তরাষ্ট্র এখনও ছাড়েনি তাও উন্মোচিত করছে,” বলেছে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের এ বিবৃতিতে পারমাণবিক বা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ব্যাপারে কোনো উল্লেখ না থাকলেও তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বৈরি নীতিই তাদেরকে প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার দিকে ধাবিত করেছে। “বাস্তবতা আমাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডকে দমিয়ে রাখার জন্য আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জালানোর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করিয়েছে,” বলেছে তারা। উত্তর কোরিয়া যেন তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার বিসর্জন দেয়, সেজন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন পিয়ংইয়ংকে একাধিকবার ‘যে কোনো সময় শর্ত ছাড়া আলোচনায়’ বসার প্রস্তাবও দিয়েছে। উত্তর কোরিয়া সেসব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির একদিন আগেই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট সুক-ইয়ল স্পেনে হতে যাওয়া ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে দেশ ছেড়েছেন। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্ট কখনোই ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দেননি। এবারের সম্মেলনে ন্যাটো ৪টি ‘সহযোগী’ দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়া বাকি তিন দেশ হচ্ছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ড। ন্যাটোর সঙ্গে মিলে বৈশ্বিক নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা পালনে আগ্রহী দক্ষিণ কোরিয়া ন্যাটোর ব্রাসেলস সদরদপ্তরে একটি প্রতিনিধিদল রাখার কথা ভাবছে বলে গত সপ্তাহে বলেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন